মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে নদী ভাঙনে দিশেহারা ধলেশ্বরী তীরে ১৭ গ্রামের ১৩ হাজার বাসিন্দা। ইতিমধ্যে নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে শত শত একর ফসলি জমি। আর মাত্র একশত মিটার ভাঙন অতিক্রম করলেই ভাঙনের কবলে পড়বে গ্রামের পর গ্রাম। এতে করে বসতবাড়ি হারিয়ে পথে বসতে পারে কয়েক হাজার পরিবার।
গ্রামবাসীদের নিজ অর্থায়নে বাঁশ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করেও ভাঙন রোধ কারা যাচ্ছে না। ফলে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ধলেশ্বরী নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা। এমন ভাঙনের দৃশ্য দেখা গেছে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার বালুর চর ইউনিয়নের চান্দেরচরের ধলেশ্বরী নদীর তীরে।
এছাড়া হুমকিতে রয়েছে ১৭টি গ্রামের হাজার হাজার বাড়িঘর, স্কুল, মসজিদ, হাট-বাজার। এছাড়াও এই ভাঙনের কবলে রয়েছে ১৫টি মসজিদ, ২টি মাদ্রাসা, ২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। ৩টি পাকা ব্রিজ, ২টি ঈদগাহ ময়দান, দুটি কবরস্থান, ৩টি নৌকার ঘাট ও ছোট ৩টি বাজারসহ বিভিন্ন কৃষি জমি।
ভাঙন রোধে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণে মানববন্ধনসহ একাধিকবার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে গ্রামের আতঙ্কতি বাসিন্দারা। তারই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল ১০টা থেকে ভাঙন এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এতে ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডে কয়েক হাজার নারী, পুরুষ ও স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা আংশ নেন।
স্থানীয়রা জানান, ১০ বছর যাবৎ ধলেশ্বরীর ভাঙনে শতশত একর কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রামবাসীর উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে ভাঙন রোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তাও কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে আর একশত ফিট অতিক্রম করলে গ্রামের পর গ্রাম ভাঙার শিকার হবে। এতে বসতভিটা হারাবে ১৩ হাজার বাসিন্দা। আগামী বর্ষার আগে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করা গেলে নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে বাড়িঘর, স্কুল, মসজিদ, হাট-বাজারসহ বিস্তিন্ন ফসলি জমি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সজিব চান জানান, প্রতিবছর ভাঙন রোধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে লিখত ও মৌখিকভাবে জানানো হয়। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না। এছাড়াও নদীতে বাল্কহেড চলাচলের কারণে ১২ মাস ভাঙনের শিকার হতে হচ্ছে আমাদের। দ্রুত ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করা গেলে মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে বালুর চর ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডে ১৭টি গ্রাম।
তবে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা সৈয়দ ফয়জুল ইলসাম জানান, ইতিমধ্যে ভাঙন রোধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসক ও মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। আসা করি আগামী বর্ষার আগেই ভাঙনরোধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই