দীর্ঘ ১৪ মাস পর পিয়াজ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ (৩৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জের সদস্যরা। একই সাথে মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মিলেছে আন্তঃজেলার দুর্ধর্ষ ডাকাতদলের সন্ধান। যারা দীর্ঘদিন ধরে পাবনা, নাটোর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মহাসড়কে ডাকাতি-ছিনতাই করে আসছিল।
সোমবার ১২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে সলঙ্গা থানার পাটধারী এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে পিয়াজ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদের মরদেহ উদ্ধার করে সলঙ্গা থানা পুলিশ। এসময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শামসুল হক (৪০) নামে আরও এক পিয়াজ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। নিহত নূর মোহাম্মদ নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার ঠাকুর লক্ষীকোল গ্রামের মো. তমিজ মণ্ডলের ছেলে এবং আহত শামসুল হক এক গ্রামের হাফিজ আলী সরদারের ছেলে।
এ ঘটনায় মৃত নূর মোহাম্মদের ছোট ভগ্নিপতি জাকির হোসেন বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ দিন পর পিবিআই মামলাটি গ্রহণ করার পর সন্দেহভাজন আসামি অপর পিয়াজ ব্যবসায়ী শামছুল হককে ৩ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কোনো তথ্য উদঘাটন করতে না পেরে ৬/৭ মাস মামলাটির তদন্ত কাজ স্থগিত করা হয়। এরপর আশপাশের জেলাগুলোতে ঘটে যাওয়া একই ধরনের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়। ওইসব ঘটনায় পাট, মহিষ, পিয়াজ, রসুন, নগদ টাকা, মোবাইল ছিনতাই এবং ডাকাতির মতো তথ্য পাওয়া যায়। আর অপরাধীরা ছিনতাই করা মোবাইলের সিম ব্যবহার করে এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনার সময় নিহত নূর মোহাম্মদ যে স্থানে পিয়াজ লোড করেছিলেন তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেখানে ইছার উদ্দিন ওরফে ইছার (৪৮) নামে একজন দুর্ধর্ষ ডাকাতের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপরই তাকে গ্রেফতারের জন্য সন্ধান চালায় পিবিআই। পরবর্তী সময়ে জানা যায়, ইছার উদ্দিন ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার একটি ডাকাতি মামলায় কারাগারে আটক আছেন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে কুমিল্লা কারাগার থেকে এনে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইছার উদ্দিন নূর মোহাম্মদ খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং আরও পাঁচজন জড়িত আছে বলে জানায়। ইছার উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় খুন ও ডাকাতিসহ অন্তত ১৫/১৬টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। ইছার উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই