ঝিনাইদহে স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় দুর্ভোগে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি সদর উপজেলার ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে চিত্র। প্রশাসকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিষয়টি তদন্তপূর্বক নির্মাণ সামগ্রীগুলো দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, স্কুল মাঠের অধিকাংশ জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে পাথর। মাঠজুড়ে ছড়িয়ে আছে পাথরের কুচি। মাঠের এক কোণে রাখা হয়েছে বুলডোজার। ছোট ছোট পাথরকুচি ছড়িয়ে পড়েছে পুরো মাঠে। বন্ধ হয়ে গেছে খেলাধুলার মাঠ। আর একটু বাতাস হলেই উড়ছে ধুলোবালি। শ্রেণিকক্ষে জমা হচ্ছে ধূলার আস্তরণ। অসুবিধার কারণে অতি সম্প্রতি মাঠে রাখা বেশ কিছু বিটুমিনের খালি ড্রাম স্কুলের প্রধান শিক্ষক লোকজন দিয়ে অন্য জায়গায় সরিয়ে রাখেন। স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান জানান, স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রাখতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা শোনেননি। বালু ও পাথরের কারণে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাতায়াত এবং খেলাধুলা করতে পারছে না। এটা নিয়ে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হবে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার স্বপন পোদ্দার জানান, আমি সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ সাহেবের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছি।
বিষয় সম্পর্কে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন জানান, স্কুল মাঠে নির্মাণ সামগ্রী রেখে শিক্ষার্থীদের অসুবিধা করা ঠিক হয়নি। আমি সরেজমিনে গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে তিনি কোন সময় সীমার কথা বলেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অধীনে ২০২১-২০২২ অর্থ-বছরে কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে শৈলমারী বাজার পর্যন্ত ৩.২ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু করে গত বছর। কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ লাখ টাকা। কাজটি পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিক এন্টারপ্রাইজ। কাজ শুরুর কিছুদিনের মাথায় অজানা কারণে স্কুল মাঠ দখল করে নির্মাণ সামগ্রী রাখেন ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাথে আরও রেখে যায় নির্মাণ কাজের জন্য আনা বালু-পাথর, বিটুমিনের ড্রাম এবং একটি বুলডোজার। কাজের মান নিয়েও নানা রকম অভিযোগ এলাকাবাসীর। নির্মিত রাস্তায় টান দিলেই অনেক জায়গায় পিচ উঠে যাচ্ছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, কাজের মান অনেক ভালো। এতে কোন সন্দেহ নেই। কেউ শত্রুতা করে এই পিচ উঠিয়েছে।
বিদ্যালয়ে নির্মাণ সামগ্রী রাখার ব্যাপারে তিনি জানান একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে তো কাজ করতে হবে। ঠিকাদার কোথায় সামগ্রী রেখে কাজ করেছে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত