গাজীপুরে ডিবি পুলিশের পরিচয়ে তল্লাশির নামে বাড়ির লোকজনের হাতমুখ বেঁধে ডাকাতির প্রায় ৬ মাস পর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতের নাম-মো: রুবেল মিয়া (২৫)। সে ময়মনসিংহের গৌরিপুর থানার রাম গোপালপুর (উরাকোনা) এলাকার মো: আব্দুল হাইয়ের ছেলে।
গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত বছরের ১১ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি মাইক্রোবাসযোগে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর থানার সারদাগঞ্জ রাইস মিল এলাকার সফিকুল ইসলামের বাড়িতে যায়। পরে ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পরিহিত দুই ব্যক্তি হাতে ওয়ারলেস ও পিস্তল নিয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে বাড়িতে অবৈধ মালামাল থাকার কথা বলে তল্লাশির নামে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় তাদের সঙ্গে অজ্ঞাত আরো ৬ ব্যক্তি পিস্তল ও চাপাতি নিয়ে ঘরে ঢুকে। তারা অস্ত্রের মুখে বাড়ির লোকজনকে জিম্মি করে মহিলা, শিশু ও পুরুষসহ সবার হাত ও মুখ বেঁধে ফেলে এবং স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠন করে। ডাকাতিকালে দুই শিশু কান্নাকাটি শুরু করলে ডাকাতরা এক নারীর বাঁধন খুলে দেয়। এসময় বাড়ির দরজায় পাহারার দায়িত্ব পালন করে রুবেল। ডাকাতি শেষে ডাকাত দল লুণ্ঠিত মালামালসহ পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরদিন কাশিমপুর থানায় মামলা দায়ের করেন সফিকুল।
তিনি জানান, কাশিমপুর থানা পুলিশ প্রায় ২ মাসের অধিক সময় মামলাটির তদন্ত করে। কিন্তু কোন রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই গাজীপুর জেলার উপর ন্যাস্ত করা হয়। পিবিআই’র তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিঃ) মো: সুমন মিয়া মামলাটি প্রায় ৪ মাস তদন্ত করেন। পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত রুবেল মিয়াকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারকৃত রুবেল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ ডাকাতি ঘটনার প্রায় ৬ মাস পর রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত রুবেল পোশাক কারখানায় চাকরি করত। করোনার কারনে চাকরি চলে গেলে সে এলাকায় অটোরিক্সা চালাতো। ঘটনার আগের দিন রুবেলকে তার এক সহকর্মী আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় ডেকে নেয়। সেখানে দলের সদস্যদের সঙ্গে দেখা হয় তার। তারা সবাই সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সদস্য। এসময় তারা রুবেলকে জানায়, “একটি বাসায় টাকা পয়সা আছে সিষ্টেম করে আনবো, তুই বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবি।” পরে তারা ডাকাতির পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ি ওই বাড়িতে ডাকাতি করে বিভিন্ন মালামাল লুণ্ঠণ করে তারা। ডাকাতদল এ কাজের জন্য রুবেলকে ১০ হাজার টাকা ভাগ দেয়।
বিডি প্রতিদিন/এএম