নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ভুয়া ভূমিহীন সাজিয়ে সরকারি খাস জমি দখল করে অবৈধ ঘর নির্মাণে বাধা দেওয়ায় ভূমি কার্যালয়ের লোকজনের উপর হামলা চালিয়েছে বেদখলকারীরা সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় ৩জন আহত হয়েছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় গুরুত্বর আহত একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। বুধবার দুপুর ২টার দিকে পুলিশ উপস্থিতিতে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মুছাপুর ক্লোজারের মুখে জেগে উঠা নতুন চরে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলো আব্দুল জব্বর (৩৩), সে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বামনী তফসিল অফিসের অফিস সহায়ক, বাংলা বাজার তফসিল অফিসের তহসিলদার জয়নাল (৫০) ও আবদুল্ল্যাহ আল মামুন (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুছাপুর ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন দলের এক জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে স্থানীয় মেম্বার আলী আজগর জাহাঙ্গীর ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে এ সরকারি খাস জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে প্রায় শতাধিক মাটির ভিটা বানানোর হয়েছে এবং দুই ধাপে ৩০টি ঘর নির্মাণ করে। একপর্যায়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আল আমিন অভিযান চালিয়ে প্রথম ধাপে নির্মাণ করা ঘর গুলো উচ্ছেদ করে দেয়। এরপর আবার ভূমি দস্যুরা বুধবার ভোর রাতের দিকে পুনরায় ওই খাস জায়গার উপর ১২টি ঘর নির্মাণ করে।
এবারও খবর পেয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তার নেতৃত্বে ফের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ভূমি কার্যালয়ে লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতে অবৈধ ঘর গুলো উচ্ছেদ করতে গেলে একাধিক ভূমি দস্যুর ইঙ্গিতে জবর দখলকারীরা ভূমি কার্যালয়ের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এতে ভূমি কার্যালয়ে ৩ জন কর্মকর্তা আহত হয়। পরে পুলিশের বাধার মুখে বেদখলকারীরা পিছু হটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ রোমন বলেন, অবৈধ ভূমি উচ্ছেদে গেলে তহসিলদার আহত হয়েছে এবং হাতাহাতি হয়েছে। পরে পুলিশ ধাওয়া দিলে বেদখলকারীরা পালিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় সহকারি কমিশনার (ভূমি) মামলা দিলে আমরা মামলা নেব।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খোরশেদ আলম চৌধুরী এসিল্যান্ডের বরাত দিয়ে বলেন ভূমি অফিসের একজন স্টাফকে আহত করা হয়েছে তিনি স্বীকার করেন। পরে তিনি সহকারী কমিশনার থেকে খরব নেওয়ার জন্য জানান। আজকে কিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বাকীটা আগামীকাল করা হবে। পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-আমিন এর নিকট এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চেয়ে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জানতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আলী আজগর জাহাঙ্গীর অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে উপজেলা থেকে অথবা বোর্ড অফিস থেকে কোন নির্দেশ আসলে আমি সাথে সাথে গিয়ে এটার প্রতিবাদ করব এবং বন্ধ করব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা খাস জায়গা, না ব্যক্তি মালিকানার জায়গা এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমি জানি এটা নদী ছিল তারপর চর জাগে। এরপর কাউকে বন্দোবস্ত দিছে কিনা এ বিষয়ে জানা নেই। কাউকে বন্দোবস্ত দিলে সে পাইছে। আর খাস থাকলে সরকার ব্যবস্থা নিবে। তিনি আরো বলেন, আমার দুই ভাই ও আমি খাস জায়গা দখলের সাথে জড়িত নেই। আমি খাস জায়গা দখলের বিষয়ে পরিষদে জানিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/এএ