হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজাসহ নানা উৎসব মানেই সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলা। কাঁটাতারের বেড়া ভূখণ্ডকে আলাদা করলেও একই ভাষাভাষি দুই বাংলার আত্মীয়তার বন্ধনকে আলাদা করতে পারেনি। তাই দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে এসে নির্দিষ্ট দূরত্বেই হাত নেড়ে ইশারা দিয়ে দুই দেশের স্বজনরা একে অপরকে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
দূর্গা উৎসবকে ঘিরে নাড়ির টানে ও আত্মীয়তার বাঁধনের কারণে একনজর দেখতে দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্য রেখায় ভিড় করেন শত শত মানুষ। প্রতিবারের মত এবারও সীমান্তের শূন্য রেখায় দূর থেকে স্বজনদের হাত নেড়ে দেখা করেন দুই দেশের মানুষরা।
হাকিমপুর উপজেলায় বিনোদনের তেমন কোনো পার্ক না থাকায় আবার অনেকদিন ওপারের স্বজনদের দেখা না হওয়ায় দূর্গাপূজার দশমী দিনটিকে বেছে নেন তারা। দুই পারের স্বজনদের হাত নেড়ে অভিবাদন জানানোতে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরী করে। সেখানে দু’দেশের মাঝে ব্যবধান কাঁটা তারের বেড়া। দর্শনার্থীরা বেড়া থাকায় সরাসরি কথা না বলতে পারলেও দূর থেকে স্বজনদের দেখে শান্তি খুঁজে পান তারা।
বুধবার দেখা যায, দুর্গাপূজার দশমীর দিনে সকাল থেকেই হিলি সীমান্তের শূন্যরেখায় দর্শনার্থীদের ভিড় যেন অন্যরকম এক দৃশ্য। জড়ো হওয়া দর্শনার্থীরা সীমানা ঘেঁষে রেললাইনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। কেউ দূর থেকে দাঁড়িয়ে স্বজনদের সঙ্গে ইশারায় কথা বলেন। বড়দের সঙ্গে ছোটরাও এসেছে এখানে।
এসময় ফুলবাড়ী থেকে আসা কৃষ্ণা রানী বলেন, সীমান্ত এলাকায় এসেছি ভারতে আমার নানির সঙ্গে দেখা করতে। দিনাজপুর থেকে আসা কৌশিক বোস বলেন, হিলি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। এখান দিয়ে দুদেশের মধ্যে পণ্য আমদানি হয়। এখানে এসে খুব ভালো লাগলো। এখানে দর্শনার্থীদের বসার জায়গা নেই। খাবারের ব্যবস্থা নেই। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর দিলে অনেকের উপকার হতো।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোষ্টের ওসি মো. বদিউজ্জামান জানান, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টে যাত্রী পারাপার দ্বিগুণ বাড়লেও বুধবার কম ছিল। বুধবার ৩শ যাত্রীও হবে না। তবে সীমান্তে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। সীমান্তের ভারত অংশে খুব নিকটতম এলাকায় একটি দুর্গাপূজার মণ্ডপ রয়েছে। অনেকেই দূর থেকে সেই পূজা মণ্ডপ দেখার জন্য শূন্যরেখায় ভিড় করেন। আবার আত্মীয়দের সাথে দূর থেকে দেখা করার জন্যও বুধবার হিলি সীমান্তের শূন্য রেখায় ভিড় ছিল চোখে পরার মতো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল