মুন্সীগঞ্জে নদী ভাঙনে বসতবাড়ি হারিয়েছে আড়াই শতাধিক পরিবার। চলতি বছরে পদ্মার হঠাৎ ভাঙনে সদর উপজেলার চরাঞ্চলের বাংলাবাজারে ২৩০ পরিবার ও লৌহজং উপজেলার লৌহজং তেউটিয়া ইউনিয়নের বাঘের বাড়ি এলাকার ২০টি পরিবারসহ জেলায় আড়াই শতাধিক পরিবার তাদের বসত ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে লৌহজংয়ের পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজিং এর ফলে হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দেয় পদ্মার তীরবর্তী গ্রামগুলোতে। তবে ভাঙন রোধে নদী তীরবর্তী এলাকায় জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধে চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সদর উপজেলার বাংলাবাজারে পদ্মার ভাঙনে বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ২৩০টি পরিবার। এছাড়াও নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে একটি শিবমন্দির। এতে করে মানবেতর জীবনযাপন করছে ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। অপর দিকে লৌহজংয়ের বাঘাই বাড়ি এলাকায় পদ্মার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়েছে ২০ পরিবার। তবে উভয় ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়দের দাবি জিও ব্যাগ নয় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পদ্মা তীরবর্তী বাসিন্দাদের রক্ষায় ব্যবস্থা নিবে সরকার।
ভাঙনের শিকার বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দারা বলেন, গত ৩ বছর যাবত পদ্মার ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। আর এবার তো ভাঙনের রেকর্ড হয়েছে বাংলাবাজারে। এখানে এক সপ্তাহে প্রায় ২৩০টি পরিবার তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। দ্রুত এই ভাঙন রোধ করা না গেলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে বাংলাবাজারের পুরো ইউনিয়ন।
অপর দিকে পদ্মায় প্রভাবশালীদের অবৈধ ড্রেজিংয়ের ফলে পদ্মার তীরবর্তী গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন লৌহজংওয়ের ভাঙন কবলিতরা। তারা জানান, নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ ড্রেজিং ব্যবহার করে আসছিলো প্রভাবশালী একটি বালু দস্যু সিন্ডিকেট। তাদের সাথে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ছাড়াও স্থানীয় আওয়ামী লীগের উর্ধ্বতন নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন। ফলে ড্রেজিং রোধে কেউ কোনো প্রদক্ষেপ নিতে সাহস পায়নি। এতে করে ভিটাবাড়ি হারাতে হচ্ছে নদীতীরবর্তী বাসিন্দাদের। বর্তমানে লৌহজং উপজেলা নির্বাহী র্কমকতার কঠোর প্রদক্ষেপের কারণে পদ্মায় ড্রেজিং বন্ধ থাকলেও পুনরায় যেন আবার চালু করতে না পারে সেই লক্ষে কার্যকর ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে পদ্মার তীর স্থায়ী বাঁধের দাবি জানান তারা।
পদ্মায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ও ভাঙন রোধে ইতোমধ্যে ৩৫ কোটির টাকার বরাদ্ধ হয়েছে জানিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র সংকর চক্রবতি বলেন, লৌহজং এলাকার ৯ কিলোমিটার পদ্মার তীরে ভাঙনরোধে ৪৪৬ কোটির টাকার একটি প্রকল্প চেয়েছিলাম। ইতোমধ্যে ৩৫ কোটি টাকার বরাদ্দ পেয়েছি, সেই টাকা দিয়ে আপাদত ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। তবে বর্ষা শেষ হলে স্থায়ী বাধের কাজ ধরা হবে। এছাড়াও সদর উপজেলার বাংলাবাজার এলাকায় ভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল