বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান এমপি বলেছেন, শ্রমিকরা রাষ্ট্রের উন্নয়নের চালিকাশক্তি। শ্রমিক আছেই বলে চাকা ঘুরছে। শ্রমিকদের ঘাম ঝড়া শ্রমে দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। অথচ বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন নির্যাতন, নিপীড়ন করে শ্রমিকদের সর্বশান্ত করেছে। এমনকি ক্রস ফায়ারে হত্যা করা হয়েছিল শ্রমিক নেতাদের।
বুধবার দিনাজপুর বন্ধন কমিউনিটি সেন্টারে দিনাজপুর জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের ২৫তম ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শাজাহান খান বলেন, বিএনপির আমলে শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী ও হাজী ইয়াকুবসহ শ্রমিকদের গ্রেফতার করে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে চালিকা শক্তি শ্রমিকদের সম্মান করে সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। তিনি গার্মেন্টস শ্রমিক, চা শ্রমিক, মটর ও ট্রাক শ্রমিকসহ সকল শ্রমিকের বেতন ভাতা ও নিয়োগপত্র প্রদানের জন্য শ্রম অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন। শ্রমিকদের পক্ষে আজ শ্রম অধিদপ্তর কাজ করছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশের অর্থনীতি পরিচালনাকারী শ্রমিক ও মালিকদের ১০০০ বাস-ট্রাক পুড়িয়ে দেওয়া হলো। ৩০০০ হাজার ভাঙচুর করা হয়েছিল। শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। অনেক শ্রমিক এখনো পঙ্গু হয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব মালিক-শ্রমিকদের ১০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।
জয় বাংলা শ্লোগানকে বিএনপি বিদায় করে দিয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জয় বাংলা ধ্বনি বাংলার মানুষের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত। তাই জয় বাংলা আজ মানুষের হৃদয়ে রয়েছে।
বিশেষ অতিথি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি ভয়াবহ করোনার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের জীবন বাঁচাতে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে এবং তাদের বাবা-মা ও সন্তানদের বিনামূল্যে করোনা টিকা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের সন্তানদের বিনা পয়সায় পড়ালেখা করার জন্য তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামূল্যে বই দিয়েছেন, পড়ালেখা ফ্রি করে দিয়েছেন।
তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি বাংলাদেশ গড়ার জন্য শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকবে, সুখে থাকবে।
সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী।
দিনাজপুর জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. সাদাকাতুল বারীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দীন, দিনাজপুর আঞ্চলিক শ্রমদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল বাসার, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইমদাদ সরকার, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক কাফিউল হাসান মৃধা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের রংপুর বিভাগীয় কমিটির সভাপতি ফজলে রাব্বী, সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ, গাইবান্দা জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল করিম, গাইবান্ধা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আফজাল হোসেন, জয়পুরহাট ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোশারফ হোসেন, নীলফামারী জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রনজিৎ কুমার রায়, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীম আলম সরকার বাবু, সাধারণ সম্পাদক এনাম উল্লাহ জেমী, জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মানিকুল ইসলাম ও সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক ইরফান আলী প্রমুখ।
এছাড়াও দিনাজপুর জেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী কাভার্ডভ্যান ও ট্রাক্টর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। শেষে ২৪ জন মৃত শ্রমিক পরিবারের মাঝে ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, ১০০ শ্রমিকের মেয়ের বিয়ের জন্য ২১ লাখ টাকা ও চারজন পঙ্গু শ্রমিককে ২ লাখ ২০ হাজার টাকার চেক বিতরণ করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এমআই