টাঙ্গাইলের সখীপুরে দুই ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সেবা পেতে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন না থাকায় যোগদানকৃত মেডিকেল অফিসার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তারা বসতে পারছেন না কর্মস্থলে। বাধ্য হয়ে তারা অফিস করছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
এই দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন উপজেলার যাদবপুর ও হাতিবান্ধা ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ। বৃহত্তর দুটি ইউনিয়ন ভেঙে চারটি ইউনিয়ন গঠন করা হলেও এখনো কোনো ইউনিয়নে স্থাপিত হয়নি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে কারণে রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্বাস্থ্য সেবা পেতে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে যেতে হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাতিবান্ধা ও যাদবপুর ইউনিয়নে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। এই দুই ইউনিয়নকে ভেঙে চারটি ইউনিয়ন গঠন করা হয়েছে। এই চার ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে ছুটে আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অন্যান্য ইউনিয়নের মতো হাতিবান্ধা ও যাদবপুরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল অফিসার নিয়োগ দেওয়া আছে। শুধুমাত্র ভবন না থাকায় তারা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অফিস করতে পারে না।
হাতিবান্ধা ইউনিয়ন কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডা. শামীমা আক্তার ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা (এসএসিএমও) হিসেবে আছেন রাসিদা আক্তার। যাদবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জন্য মেডিকেল অফিসার হিসেবে আছেন ডা. শারমিন সেলিম জ্যোতি ও স্বাস্থ্য সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা (এসএসিএমও) হিসেবে আছেন মোস্তফা কামাল। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসেছন। স্থাপনা না থাকার বিষয়টি অফিশিয়ালভাবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে জানানো হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের চাকদহ, কামালিয়াচালা, তক্তারচালা এবং যাদবপুর ইউনিয়নের রতনপুর, বেড়বাড়ি, জসিমের বাজার এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা হলে ছুটে আসতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। গুরুতর অসুস্থ রোগীকে জরুরিভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার সময় অনেকে দুর্ভোগের শিকার হয়। মাঝে মধ্যে মৃত্যুর ঝুকি নিয়েও চিকিৎসা সেবা নিতে আসতে হয় তাদের।
যাদবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম আতিকুর রহমান আতোয়ার বলেন, ডাক্তার আছে ভবন নাই, এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া একটু কষ্টকর হয়ে যায়। ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন থাকলে সেখানে ডাক্তার বসতো, তাহলে সাধারণ মানুষের কষ্ট হতো না।
হাতিবান্ধা ইউনিয়নের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা আক্তার বলেন, হাতিবান্ধা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার হিসেবে প্রায় পাঁচ বছর ধরে দায়িত্বে আছি। কিন্তু দায়িত্ব পালন করছি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ভবন না থাকার কারণে উপজেলার দুটি ইউনিয়নে এই সমস্যা। সরকারিভাবে ভবন হলেই আমারা আমাদের নির্ধারিত কর্মস্থলে যেতে পারবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য, পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. রুহুল আমীন মুকুল বলেন, হাতিবান্ধা ও যাদবপুরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভবন থাকলে সেখানকার মানুষের সুবিধা হতো। ইতিমধ্যে এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই