মাদক সেবনে বাধাসহ মাদক সেবনের ছবি ভাইরাল হওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ আহমেদকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কাজিপুর উপজেলা পরিষদ এলাকায় কুয়াশা হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত পারভেজ আহমেদকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম জিয়াউর রহমান জিয়া তালুকদার। তিনি একই সংগঠনের গান্ধাইল ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনায় জিয়াউর রহমানের সহযোগীরাও জড়িত বলে জানা গেছে। জিয়াউর রহমান গান্ধাইল ইউনিয়নের দুবলাই গ্রামের বাসিন্দা ও দুবলাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী।
অন্যদিকে মাদকের ছবি ভাইরাল হওয়ার পরই অভিযুক্ত জিয়াকে উপজেলা যুবলীগ সাময়িক অব্যাহতির পাশাপাশি কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছে। আর মারপিটের ঘটনায় পারভেজের ভাই বাদী হয়ে কাজিপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, যুবলীগ নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া, তার সহযোগী রুবেল ও মোতালেব দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যুবলীগ নেতার ভাই শফিকুলসহ কয়েকজন ১৬ নভেম্বর সকালে জিয়াকে মাদক সেবন ও বিক্রিতে নিষেধ করেন। এরই মধ্যে মাদকাসক্ত জিয়াউর রহমানের একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে জিয়াউর রহমান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভেজ আহমেদ, যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ উপজেলার কুয়াশা হোটেলের সামনে বসেছিলেন। এ অবস্থায় জিয়াউর রহমান জিয়া তালুকদার, তার ভাতিজা রুবেল ও সহযোগী মোতালেবসহ অতর্কিতভাবে পারভেজের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট করে। এতে তার হাত-পা ফেটে যায়। পরে নেতৃবৃন্দ উদ্ধার করে তাকে প্রথমে কাজিপুর পরে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবলীগ নেতা পারভেজ আহমেদ জানান, তার মাদকসেবনের ছবি কে বা কারা ফেসবুকে ছেড়ে দেয়, তা আমার জানা নেই। কিন্তু সে আমাকে দোষারোপ করে এবং অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে মারপিট করেছে।
কাজিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামল কুমার দত্ত জানান, উপজেলা যুবলীগের নেতা পারভেজের উপর হামলা এবং তাকে মারপিট করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এদিকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জিয়া তালুকদারকে সাময়িক অব্যাহতির পাশাপাশি কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না জানতে চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উপজেলা যুবলীগ। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে অব্যাহতিসহ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
কাজিপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আসলাম জানান, জিয়াউর রহমান তালুকদার সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের সাথে লিপ্ত থাকায় তাকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সংশোধন হননি। এ কারণে আগেই তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আজকে তাকে সাময়িক অব্যাহতি ও কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই