স্বামী নেই ফাতেমার। চার ছেলে ও অন্তত ১০ জন নাতি থাকার পরও বৃদ্ধা ফাতেমা বেগমের (৭০) জায়গা হয়নি ঘরে!দুই দিন আগে ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন ছেলের বৌ। আর এ দুই দিন পড়ে ছিলেন খোলা আকাশের নীচে, রাস্তায়। ফাতেমা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া দশ শতক জমি সন্তানদের লিখে দিয়েছেন।ফাতেমা শেরপুরের নকলা পৌরসভার ৯ নং কলাপাড়া ওয়ার্ডের মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী।
স্থানীয় এলাকাবাসী ঐ বৃদ্ধা ফাতেমার ছেলে মেয়ে আত্মীয় স্বজনদের বুঝিয়েও ঘরে তুলতে পারেনি। বৃদ্ধা শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে থাকার কারণে অসুস্থ হয়ে যায়। স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি শুনে নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ ঐ বৃদ্ধাকে নকলা হাসপাতালে ভর্তি ও খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
আজ শনিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ, নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. গোলাম মোস্তুফাসহ নকলা থানার পুলিশের একটি দল বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে আইন ও ধর্মীয় মতে মায়ের পালন লালন করতে সন্তানরা বাধ্য বলে স্বজনদের আইনের ব্যাখা দেন। বৃদ্ধাকে ঘরে না তুললে ইউএনও আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানালে পরিবারের সদস্যরা বৃদ্ধাকে ঘরে তুলে নেয় এবং থাকা খাওয়ার নিশ্চয়তা দেন।
নকলা উপজেলায় নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ ওই বৃদ্ধার ঘরের জন্য ২ বান টিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা ও ২ টি শাড়ি প্রদান করেন। ভবিষ্যতে ওই নারীর খবর রাখার জন্য কয়েকজনকে দায়িত্ব দেন। আগামী জুন মাসে মহিলার জন্য একটি পাঁকা ঘর দেওয়া হবে বলে এলাকাবাসীর কাছে কর্মকর্তা প্রতিশ্রুতি দেন। বিনিময়ে এই বৃদ্ধার দেখা শুনা করতে হবে।
এদিকে নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাক্তার গোলাম মোস্তুফা ওই বৃদ্ধা ফাতেমা যত দিন বাঁচবেন তত দিন বিনামূল্যে চিকিৎসা দিবেন বলে জানিয়েছেন। প্রশাসনের এমন ব্যবস্থায় স্থানীয়রা খুশি হয়েছেন এবং সন্তানদের ভৎসনা করেছেন।
নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, মা বাবার যেন সস্তানদের অবহেলার শিকার না হয় সেজন্য সরকার কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। আর এজন্য পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি অপরিহার্য।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল