জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও আর্টোল্যুশনের সাথে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একটি ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করেছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে কক্সবাজারের সাধারণ মানুষরা সেখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছে।
৫২ বছর আগে এই মার্চ মাসে বাংলাদেশের মানুষ বাধ্য হয়েছিল শরণার্থী হতে, আর তারাই আজ উদারভাবে আশ্রয় দিচ্ছে মিয়ানমারে সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের।
কক্সবাজারে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআর’র প্রধান কর্মকর্তা ইয়োকো আকাসাকা বলেন, ঘুড়ি উড়ানোর সময় আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই আমাদের শৈশবের কথা, যখন আমাদের সবারই কিছু আশা ও স্বপ্ন ছিল। রোহিঙ্গা শিশুদেরও এরকম অনেক স্বপ্ন আছে, আর আমরা চাই তাদের যথাযথ শিক্ষা ও দক্ষতা দিয়ে সে স্বপ্নগুলো পূরণে তৈরি করতে। যেন প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরি হওয়ার পর তারা নিজ দেশে গিয়ে নিজেদের সমাজ পুনর্গঠন করতে পারে। বাংলাদেশের সরকারের সাথে মিলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ও কক্সবাজারের মানুষের জন্য আমরা কাজ করে যাবো।
বাংলাদেশী ঐতিহ্যে অনুপ্রাণিত হয়ে আয়োজিত এই উৎসব বার্তা দেয় ঐক্য ও বন্ধুত্বের। শরণার্থীদের সাথে সংহতির বার্তা লিখে শত শত অতিথি ঘুড়ি উড়িয়েছেন। সৈকতে বসেই অনেকের আঁকা ম্যুরাল, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংগীত পরিবেশনা ও বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তৈরি স্থানীয় খাবারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। আর এতেই প্রমাণিত হয় শিল্প ও সংস্কৃতির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠন করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজ হাতে ঘুড়ি উড়িয়েছিলেন কক্সবাজারের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট মো. জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, এই ঘুড়ি উৎসব আমার শৈশবের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। উপস্থিত দর্শকদের আনন্দ দেখে আমি অভিভূত। বন্ধুত্ব ও সংহতির এই ধরনের অনুষ্ঠান আরও আয়োজন করা দরকার।
কক্সবাজার থেকে বন্ধুত্বের বার্তা সম্বলিত এই ঘুড়িগুলো শিগগিরই পৌঁছে দেয়া হবে ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছে।
কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিনুল হক মার্শাল বলেন, আমাদের এই শহরে আমরা লালন ও ধারণ করি বৈচিত্র্য ও সংহতি। তাই এই ঘুড়ি উৎসব দেখে আমি আনন্দিত। আমি আয়োজকদের অনুরোধ করবো যেন এই ধরনের অনুষ্ঠান আরও আয়োজন করা হয়, যা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই