রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার হাড়িয়ারকুঠি ইউনিয়নের জুম্মাপাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল গফুর অসুস্থ থাকায় স্ত্রী শাহেদা বেগম (৫১) দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। তিনি সরকারের কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক ছিলেন। শাহেদা বেগম ঈদের দুই দিন আগে স্ট্রোক করেন। ৭ জুন শাহেদা মারা গেলে খিয়ারজুম্মা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সোমবার সকালে শাহেদার কাছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পাবে এমন দাবি নিয়ে তার বাড়িতে যান একই গ্রামের জোনায়েদ হোসেনের স্ত্রী রাসেনা বেগম।
শাহেদার ছেলে-মেয়েরা টাকা দিতে রাজি না হলে শাহেদার কবর খুঁড়তে যান রাসেনা ও তার স্বামী জোনায়েদ হোসেন। তাদের কবর খোঁড়া দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা চিৎকার দিলে রাসেনা বেগম ও তার স্বামী পালিয়ে যান। এ দৃশ্য দেখতে গ্রামের শত শত লোক কবরস্থানে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে ঘটনাস্থলে যান এবং রাসেনাকে আটক করেন থানায় নিয়ে আসেন। এই ঘটনায় মৃতের স্বামী আব্দুল গফুর বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ বিকেলে রাসেনা বেগমকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠান।
নিহত শাহেদার মেয়ে সাবিনা বেগম অভিযোগ করেন, রাসেনা তার মায়ের কাছে টাকা পাবে এমন দাবি নিয়ে সকালে আসেন। কখনও ৩০ হাজার, কখনও এক লাখ ২০ হাজার টাকা পান বলে দাবি করেন। আমাদের থাকার জায়গা ছাড়া কোনো সহায় সম্বল নেই। রাসেনা যে টাকা দাবি করছে তা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। মা কখনো বলেনি রাসেনা টাকা পাবে। তাই রাসেনাকে বলি টাকা যদি পান তাহলে মাফ করে দিয়েন। কিন্তু তিনি নারাজ হওয়ায় রাগ করে বলি, যার কাছে টাকা পান তার কাছ থেকে নেন। এরপর রাসেনা ও তার স্বামী মায়ের কবর খুঁড়তে যান। অথচ তারা আমার মায়ের কবরস্থানে লাশ বের করার জন্য কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়েছে। এলাকার শত শত মানুষ কবরস্থানে গিয়ে দেখেছে। আমি তাদের সঠিক বিচার চাই।
তারাগঞ্জ থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, লোক মাধ্যমে ঘটনাটি জানার পর সরেজমিনে গিয়ে কবরের মাটি সরানো দেখেছি। সেখানে হাজার উৎসুক লোকজনের ভিড় দেখেছি। এবিষয়ে মামলা হলে রাসেনাকে গ্রেফতার দেখিলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল