ঝালকাঠির রাজাপুরে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে অভিমানে নবম শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী কেয়া মনি আত্মহত্যার ঘটনার তিন দিন পার হলেও এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে ওই ছাত্রীর সহপাঠী ও এলাকাবাসী।
পুলিশ বলছে, তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
যে বেঞ্চে বসে সহপাঠীদের সাথে কেয়া মনির পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল চল্লিশ কাহনিয়া উত্তরপুর দাখিল মাদ্রাসার সেই বসার আনস খালি। অন্যদিকে বিষখালি নদীর পাড়ের নির্জন রাস্তা থেকে শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে কিশোর গ্যাং আতঙ্ক বিরাজ করছে।
পরিবার ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, মাদ্রাসার জন্য ছবি তুলে বাড়ি ফেরার পথে কয়েক জন যুবকের ইভটিজিংয়ের শিকার হন কেয়া মনি। বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আত্মহত্যা করেন এই কিশোরী। কেয়া ওই এলাকায় মজিদ খানের মেয়ে। গত মঙ্গলবার রাতে উপজেলার চল্লিশ কাহনিয়া এলাকায় কেয়ার ঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উঠলেও ঘটনার তিন দিন পরও পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি।
কেয়ামনির মা নাছিমা বেগম জানান, গত ১১ জুন বিকেলে মাদ্রাসায় জন্য ছবি তুলে বাড়ি ফেরার পথে চল্লিশ কাহনিয়া নদীর পাড়ের নির্জন এলাকায় পথরোধ করে ওই এলাকার খলিল মোল্লার ছেলে মিজান মোল্লাসহ কয়েক জন যুবক মিলে কেয়া মনিকে ইভটিজিং করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে এবং ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি এলাকায় ও মাদ্রাসায় ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার দুই দিন পর আত্মহত্যা করেন কেয়া মনি। ঘটনার পর থেকে মিজান মোল্লাসহ অভিযুক্তরা আত্মগোপনে রয়েছে।
বাবা মজিদ খান মেয়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার চান এবং আর যেন কারো মেয়েকে এভাবে মারা যেতে না হয় সেজন্য ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত মিজান মোল্লাকে না পাওয়া গেলেও তার পিতা খলিল মোল্লা দাবি করেন, কয়েক যুবক তাদের আটকিয়ে ছিলো তার ছেলে শুধু ভিডিও করেছে। এ ঘটনায় তার ছেলে যদি জড়িত থাকে এবং অপরাধ করে থাকে তার বিচার তিনিও চান।
চল্লিশ কাহনিয়া উত্তরপুর দাখিল মাদ্রাসার সহসুপার নুরুল ইসলাম জানান, কেয়া মনি অত্যন্ত মার্জিত ও মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। তার মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নেয়ার মত নয়। তাকে ইভটিভিং করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে, জড়তিদের কঠোর শাস্ত দাবি করেন তিনি।
ঝালকাঠি সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) মোঃ মাসুদ রানা জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ইভটিজিংয়ের একটি বিষয়ের অভিযোগ উঠেছে. সে বিষয়টি তদন্ত করে ইভটিজিংয়ে জড়িতদের আইনের আওতায় হবে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল