সিরাজগঞ্জে অভাবের তাড়নায় রাসেল (১৫) নামে এক চালককে খুন করে ভ্যান ছিনতাই করেছে জাহাঙ্গীর হোসেন (৩১) নামে এক যুবক। পুলিশ ঘাতক যুবককে আটক করেছে। জাহাঙ্গীর হত্যার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মোবাইল, ভ্যানের ব্যাটারি, চাবি, পাঁচ হাজার ৫০০ টাকাসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বাঁশের লাঠি ও লুঙ্গিও উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার যুবক জাহাঙ্গীর শাহজাদপুর উপজেলার মন্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। হত্যার শিকার কিশোর ভ্যানচালক পাবনা জেলার ফরিদপুরের ডেমরা গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে।
শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান জানান, জাহাঙ্গীর পেশায় সিএনজি অটোরিকশাচালক। পাঁচ বছর আগে সে তার অটোরিকশাটি বিক্রি করে দেয়। এরপর রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করে। কিন্তু অল্প আয় দিয়ে তার সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। অভাবের তাড়নায় সে ভ্যান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত ১ অক্টোবর জাহাঙ্গীর পাবনা জেলার ফরিদপুর থানার ডেমরা বাজারে যায় এবং টার্গেট খুঁজতে থাকে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সে রাসেলকে ভ্যানসহ দেখতে পায়।
পরে জাহাঙ্গীর শাহজাদপুরের চরাচিথুলিয়া মন্ডলপাড়ায় ঘুষি (গোবরের তৈরি) নিয়ে আসার জন্য ৭০ টাকা চুক্তি করে ভ্যানে ওঠে। এরপর উপজেলার মন্ডলপাড়া এলাকায় এসে ভ্যান থামিয়ে রাসেলকে পাশের একটি বালুর মাঠের মধ্যে নিয়ে যায়। সেখানে পড়ে থাকা একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে রাসেলের মাথার বাম পাশে আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর সে রাসেলের পরিধেয় লুঙ্গি তার গলায় পেঁচিয়ে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে তার পকেট থেকে মোবাইল ও ভ্যানের চাবি নিয়ে নেয়। এরপর মরদেহ পাশের ধানক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে জাহাঙ্গীর ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গত ৩ অক্টোবর ধানক্ষেতে রাসেলের মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ৪ অক্টোবর রাসেলের পরিবার ফেসবুকে জানতে পেরে শাহজাদপুর থানাতে এসে মরদেহ দেখে শনাক্ত করে এবং রাসেলের বাবা রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। শাহজাদপুর থানা-পুলিশের একটি দল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলা মন্ডলপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতার জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির করা হলে সে অভাবের কারণে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে শাহজাদপুর থানায় আরও তিনটি চুরির মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই