রংপুরে অস্বচ্ছলতা সুযোগে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে জোরপূর্বক নবজাতক বিক্রির ঘটনায় ক্লিনিক পরিচালকসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সাথে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- রংপুর নগরীর বাবুখাঁ কামারপাড়ার নজির উদ্দিন সরকারের ছেলে হলিক্রিসেন্ট ক্লিনিকের পরিচালক পল্লী চিকিৎসক এমএস রহমান রনি (৫৮), পীরজাবাদ এলাকার সামসুল ইসলামের ছেলে রুবেল হোসেন রতন (৩০) ও রতনের স্ত্রী জেরিনা আক্তার বিথী (৩০)।
রবিবার বিকেলে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ বিভাগ কার্যালয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রংপুর নগরীর বুড়ারঘাট এলাকার ওয়াসিম আকরামের স্ত্রী লাবনী’র (২২) গত ১৩ জানুয়ারি প্রসব বেদনা নিয়ে হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই রাতে সিজারের মাধ্যমে তিনি একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। এর তিনদিন পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ লাবনী ও তার স্বামীকে বিল পরিশোধের জন্য চাপ দিতে থাকে। ওয়াসিম ও লাবনী দম্পতির অস্বচ্ছলতাকে পুঁজি করে ক্লিনিকের পরিচালক এমএস রহমান রনি তার পূর্ব পরিচিত জেরিনা আক্তার বিথী ও তার স্বামী রুবেল হোসেন রতনের কাছে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নবজাতককে বিক্রি করে দেন। এতে সহযোগিতা করে লাবনীর স্বামী ওয়াসিম। এ ঘটনায় দিশেহারা লাবনী মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ রবিবার নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধারসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে। নবজাতক বিক্রির ঘটনার সাথে জড়িত লাবনীর স্বামী ওয়াসিমকে গ্রেফতারে পুলিশের তৎপরতা অব্যহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। রবিবার আসামীদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী লাবনী বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে পল্লী চিকিৎসক রনি টাকা-পয়সা নিয়ে চিন্তা করতে নিষেধ করেছিলেন। ডেলিভারীর পর তিনি বিল পরিশোধের জন্য চাপ দেন। আমার স্বামী দুই দিন সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা কিছুতেই রাজি হয়নি। এরপর আমার স্বামী তার কিডনী বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। আমি আমার রক্ত বিক্রি করে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে চেয়েছি। তারা আমার স্বামীকে ম্যানেজ করে আকুতি-মিনতি স্বত্ত্বে আমার নবজাতক ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম