বগুড়ার নন্দীগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় আবাদি জমি ও পুকুর সংস্কারের নামে ফের মাটি বিক্রি শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। ঈদুল ফিতরের ছুটিকে টার্গেট করে মাঠে নেমেছে তারা। রাতের আঁধারে কৃষি জমি ও পুকুরে চলছে মাটি কাটার মহোৎসব। মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচল করায় সরকারের উন্নয়ন করা গুরুত্বপূর্ণ নতুন সড়কগুলো বেহাল দশায় পরিণত হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কগুলোতে দুর্ঘটনায় পড়ে যানবাহন। প্রশাসন অভিযান চলালেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
জানা গেছে, মাটি কেটে ট্রাক্টর দিয়ে নেওয়া হচ্ছে আশপাশের ভিটা ও আবাদি জমিতে। এতে করে বন্ধ হচ্ছে পানি নিষ্কাশনের পথ। এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব। এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের ৬ তারিখ পর্যন্ত মাটি খনন করে বিক্রির অপরাধে থানায় ৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় পরদিন জামিন নিয়েই ফের বেপরোয়া হয়ে ওঠে এই চক্র।
নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার নামুইট, উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের রুস্তমপুর, মাটিহাস, ভাটগ্রাম ইউনিয়নের গোছাইল, দামরুল, বুড়ইল ইউনিয়নের পোঁতা, দাশগ্রাম, পেংহাজারকি, তুলাশন হামিদ-বাজারসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পুকুর সংস্কারের নামে এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি ট্রাক্টর মাটি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকায়। প্রত্যেক আবাদি জমি, ভিটা ও পুকুর খনন করে একেকটি চক্র প্রায় ৫ হাজার ট্রাক্টর মাটি বিক্রি করছে। এসব এলাকায় প্রায় ১০টি মাটি কাটা চক্র রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কৃষি জমি ধ্বংস ও পুকুরখননের নামে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে প্রভাবশালীরা। মাটিবাহী ট্রাক্টর চলাচল করায় নষ্ট হচ্ছে সড়ক। যোগাযোগ ব্যবস্থাগুলো মাটিতে একাকার হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সরকারের নিয়মনীতি মানছে না কেউ। মাটি কাটতে অনুমতিরও প্রয়োজন হচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নামমাত্র আবেদন করেই পুকুর সংস্কারের নামে গভীর গর্ত করা হচ্ছে। এমনকি পুকুরের তলদেশ থেকে বালু তুলে বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ুন কবির জানান, পুকুর সংস্কারের নামে ও আবাদি জমির মাটি কেটে বিক্রি ঠেকাতে নজরদারি রয়েছে। সোমবার প্রস্তুতি সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মাটি বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই