নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় কিছু দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৩ পুলিশসহ অন্তত ৪ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিক নিহত সকলের পরিচয় জানাতে পারেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার সংঘর্ষের এসব ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে দুর্বৃত্তরা চাটখিল থানায় হামলা চালায়। থানা ভবনের ভেতরে প্রায় প্রতিটি কক্ষে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরের দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারীরা সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকায় জড়ো হয়। এরপর তারা সেখােনে আনন্দ উল্লাস করতে থাকে। বিকেল পাঁচটার দিকে আনন্দমিছিল করে। ও কয়েকজন দুর্বৃত্তরা সোনাইমুড়ী থানায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ওই সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলে একজন নিহত হন। এরপর উত্তেজিত দুবৃত্তরা সংঘবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা-ভাঙচুর চালালে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। পরবর্তীতে উত্তেজিত দুর্বৃত্তরা থানা ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আরও শতাধিক লোক আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৩৪ জন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছে বলেও জানা যায়।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৩৭ জন জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে ৩ জন হাসপাতালে মৃত আনা হয়। বর্তমানে ৩৪ জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। আহতদের বেশির ভাগই সোনাইমুড়ীর। নিহত ৩ জনও ওই সাইডেরই।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত ৩ পুলিশ সদস্যের মরদেহ পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তখন ১৩ জন পুলিশ সদস্য সেখােনে ছিল। এর মধ্যে ৪ জনকে পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনজন পুলিশকে দুর্বৃত্তরা জবাই করে হত্যা করেছে। ধোঁয়ায় ভবন ছেয়ে আছে। পুরো ভবন রিকভারি করার পরে প্রকৃত বিষয়টি বুঝা যাবে।
এসপি আসাদুজ্জামান বলেন, শুনতেছি সাধারণ মানুষ ৩ জন, কেউ বলতেছে ২ জন মারা গেছে। বেঁচে যাওয়া এক পুলিশের বরাত দিয়ে এসপি আরও বলেন, প্রথমে আন্দোলনকারীরা আক্রমণ করে পরে তারা তাদের বাঁচানোর জন্য উপরে ফাঁকা গুলি করে। নিহতের পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে এএসআই মো. নাছির, এসআই মো. বাছির ও কনস্টেবল মোশারফ। ধোঁয়ার কারণে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছিনা। সোনাইমুড়ী থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিনের শরীরে ৫টি গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
অপরদিকে, বিকেল পাঁচটার দিকে এক দল বিক্ষোভকারী চাটখিল থানায় হামলা চালায়। থানা ভবনের ভেতরে প্রায় প্রতিটি কক্ষে হামলা-ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়।