রাজবাড়ীতে অবৈধ অস্ত্রের ভয়াবহ বিস্তার ঘটেছে। পদ্মার তীরবর্তী এ অঞ্চলে আগ্নেয়াস্ত্রের ছড়াছড়ি। অভিযানে যে পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয় তার থেকে বেশি অস্ত্র নিরাপদে চলে যায় অপরাধীদের গোপন ডেরায়। ছোটখাট ঘটনায়ও ঘটছে অস্ত্রের ব্যবহার। আধিপত্য বিস্তারে রাজনৈতিক দলের ক্যাডার মাস্তানদের প্রকাশ্যে অস্ত্রের ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
সম্প্রতি ছাত্র আন্দোলন দমাতে রাস্তায় অবৈধ অস্ত্র দেখা গেছে। ছাত্র আন্দোলন দমাতে সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সামনে থেকে দুই বস্তা থেকে ধারালো রামদা বের করে অপরাধীদের হাতে দেওয়া হয়। ক্ষমতার পালাবদলে এসব অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন জেলা বিএনপির নেতারা।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান ও পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদের কাছে জেলায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অনুরোধ করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী বাবু ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এসব অভিযোগ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজবাড়ী পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। জেলা সদরের মিজানপুর, চন্দনীতে বালুমহালে আধিপত্য বিস্তারে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছর পদ্মায় বালু উত্তোলন ও চাঁদা আদায়কে কেন্দ্র করে ছয়জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়। এ ছাড়া গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়াতে যৌনপল্লীতে আধিপত্য বিস্তারে সেখানে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার হতে দেখা গেছে।
২০১৪ সালে যৌনপল্লীতে সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র সাইফুল ইসলাম রিপনকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়। মামলার রায়ের পর ওই শিক্ষার্থীর বাবা মোহন মন্ডল বলেন, ওই ঘটনায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যসহ বেশ কয়েকজন জড়িত ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় বস্তা থেকে অবৈধ অস্ত্র বের করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রাজবাড়ীতে অস্ত্র উদ্ধারে জেলা পুলিশের অবস্থান তৃতীয়। তবে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। সেগুলো উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ