পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই নওগাঁতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তরবঙ্গের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পাবনাসহ রাজশাহী বিভাগের মোটরযান চালকরা।
মঙ্গলবার রাতে রাজশাহী বিভাগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মিজানুর রহমান রতন এবং রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘৪ ফেব্রুয়ারি নওগাঁ জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো প্রকার পূর্বঘোষণা, নোটিশ বা আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রদান না করে আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে পেট্রোল পাম্প মালিকরা চরম হতাশ ও ক্ষুব্ধ। আমরা এই অভিযানের প্রতিবাদ জানাই।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ‘পাম্প মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে সরকার নির্ধারিত নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন এবং নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করছেন, ফলে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এতদিন ব্যবসা পরিচালিত হলেও এই ধরনের উচ্ছেদ অভিযান আগে কখনো হয়নি, যা উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।’
এদিকে এই ধর্মঘটের কারণে শতশত বাইকার প্রেট্রোল পাম্পগুলোর সামনে থেকে ফিরে যাচ্ছেন, কেউ কেউ পরিবার পরিজন নিয়েও সমস্যায় পড়ছেন।
দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার এসএম কামরুজ্জামান শিপলু বলেন, আমি পরিবার নিয়ে পাবনা থেকে চাটমোহরে একটি দাওয়াতে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি। বাইকে তেল নেওয়ার জন্য পাবনা কলেজ গেটের পাম্পে এসে শুনেছি তাদের ধর্মঘট। এখন তেল দেওয়ার উপায় বলে জানিয়েছেন পাম্পের লোকজন।
নূরে আলম নিউটন নামের অপর এক গ্রাহক বলেন, পূর্বে ঘোষণা দিয়ে এ ধরনের ধর্মঘট আহ্বান করলে, আমরা রাতেই তেল তুলে রাখতাম। আমার ব্যবসায়িক কাজে ঈশ্বরদী যেতেই হবে। কি যে সমস্যায় আছি বলে বোঝাতে পারবো না। এমন শতশত তেল গ্রাহকরা ফিরে যাচ্ছেন বিভিন্ন পাম্প ষ্টেশন থেকে।
এ বিষয়ে কথা হয় পাবনার ফরিদ ফিলিং ষ্টেশনের ম্যানেজার চন্দন কুমার রায়ের সাথে। তিনি জানান, রাতে আকস্মিক সিদ্ধান্তের কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কখন ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে সেটাও সঠিকভাবে বলতে পারেননি তিনি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউটর্স, এজেন্টস এন্ড পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ইনসাফ আলী বলেন, আমাদের কিছুই করার নেই। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত এটি।
জনদুর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি ব্যবসা করার জন্য। আমাদের বিষয়টাও তো দেখতে হবে। ইতোমধ্যে বিভাগীয় কমিশনারের সাথে আমাদের বিভাগের নেতাদের কথা চলছে, হয়তো দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ