ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী 'মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস' আন্তঃনগর ট্রেনটি ইঞ্জিনসহ স্টেশনে পৌঁছালেও পেছনের ১৩টি বগি রেললাইনে পড়ে রইল। এতে করে প্রায় চার ঘণ্টা রেল চলাচল বন্ধ থাকে এবং ভোগান্তিতে পড়েন শত শত যাত্রী।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যা ৭টার পর নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ রেললাইনের চল্লিশা এলাকায়, মগড়া নদীর ব্রিজের ওপর। জানা গেছে, ট্রেন চলাকালীন এক জায়গায় স্প্রিং ভেঙে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে ইঞ্জিনের সঙ্গে থাকা একটি বগি নিয়ে লোকোমোটিভ নেত্রকোনা স্টেশনে পৌঁছায়, আর বাকি ১৩টি বগি থেমে থাকে ব্রিজের ওপর।
দীর্ঘ সময় ব্রিজের ওপর ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকায় যাত্রীদের মধ্যে ভয়, হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে বারহাট্টা ও মোহনগঞ্জগামী যাত্রীরা সম্পূর্ণভাবে আটকা পড়ে যান। অন্যদিকে, নেত্রকোনা শহরের যাত্রীরা নিজেদের মতো করে স্টেশনে ফিরতে সক্ষম হন।
ময়মনসিংহ থেকে রিলিফ ট্রেন এসে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে চার ঘণ্টা সময় লেগে যায়। পরে আটকে পড়া বগিগুলো স্টেশনে এনে পৌঁছাতে রাত পৌনে ১২টা বেজে যায়। এতে ঢাকামুখী পরবর্তী ট্রেন চলাচলের সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়।
ওমান ফেরত এক যাত্রী মোশাররফ হোসেন সুলতান বলেন, 'দুদিন ধরে গোসল করতে পারিনি। বিমানের পর ট্রেন বিভ্রাট, সব মিলিয়ে বাড়ি পৌঁছাতে নাভিশ্বাস উঠে গেছে।'
অন্য এক যাত্রী ফাতেমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'এই দেশে যা মন চায় তাই হয়। সাধারণ মানুষের কোনো দাম নেই।'
ট্রেন পরিচালক জাহিদ হোসেন জানান,'সব ঠিকঠাকই চলছিল। চল্লিশায় এসে একটা বড় ঝাঁকুনি লাগে, তারপরই ট্রেন থেমে যায়। আমরা সবাই মিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছি।'
নেত্রকোনা বড় স্টেশনের বুকিং সহকারী নজরুল ইসলাম বলেন, 'আকস্মিক দুর্ঘটনায় সিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। তবে রবিবার সকাল থেকে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।'
ঘটনার পর যাত্রীরা পুলিশ সুপার ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও প্রথমে ফোনে সাড়া মেলেনি। পরে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস আশ্বস্ত করে জানান, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা