১.
পিকুল : যাবি?
নকুল : কই?
পিকুল : টুকটুকির ওই বড় মুরগিটা ডিম দিয়েছে। আজ রাতে ওর মুরগির ডিমগুলো চুরি করব। তারপর দেখাব মজা। শয়তান মেয়েটা আজ ক্লাসে আমাকে স্যারের কাছে বকা খাওয়াইছে।
রাত নামল। পিকুলের মা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। জ্যোৎস্নাস্নাত রাত। চারদিকে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক।
জানালার কাছে নকুল ডাকছে। পিকুল, পিকুল! আসছি আমি, চল এবার মিশনে।
পিকুল : দেখ তুই আশপাশে কেউ আছে কিনা? আমি ডিম নিব। যেই ভাবা সেই কাজ ৪-৫ টা ডিম নিয়ে পিকুল একটা শয়তানি হাসি দিল। কাল টুকটুকির মুখখানা যা হবে না দেখার মতো।
পরদিন ক্লাসে টুকটুকির মন খারাপ।
পিকুল : এই তোর কী হয়েছে? এমন মন খারাপ কেন?
টুকটুকি : তোর কী? যা এখান থেকে ভাগ!
পিকুল : মনে মনে আচ্ছামতো শিক্ষা দেওয়া গেছে মেয়েটাকে। পিকুলের সঙ্গে পাংগা!
আজ পিকুলের অঙ্ক পরীক্ষা। কতগুলো যোগ অঙ্ক দিল। পিকুলের মাথার ওপর দিয়ে গেল। আন্দাজে পিকুলের মাথায় যে সংখ্যাগুলো মনে আসছে পিকুল তাই লিখে যাচ্ছে। ক্লাসে ডাব্বা মার্কা স্টুডেন্ট পিকুল। স্যার ওর নাম দিয়েছে ‘আণ্ডা’।
পরেরদিন ম্যাথ এক্সামের রেজাল্ট দিল।
এই আণ্ডা এদিকে আয়! কী করছিস তুই? যোগ একটাও হয় নাই। তুই পাইছিস আণ্ডা নম্বর। তোর নাম যেমন আণ্ডা পাইছিস ও আণ্ডা। আণ্ডার স্টুডেন্ট তুই। এসব কথায় পিকুলের কিছুই হয় না।
২.
এই যে ভাবি শুনেন? পিকুল আমার গাছের আম চুরি করেছে। আমগুলো বড়ও হয় নাই।
পিকুলের মা : তুই বলে আম চুরি করছস।
পিকুল : না, আমি তো চুরি করি নাই।
পিকুলের মা : মিথ্যা বলবি না। তোর এই জ্বালা আর আমার সহ্য হয় না। শুধু তোর নামে বিচার আর বিচার। আর কতদিন জ্বালাবি? সেদিন পিকুলের মা পিকুলকে অনেক মারধর করল। তোরে ঢাকায় পাঠিয়ে দিব তোর মামার কাছে। ওখান থেকেই পড়াশোনা করবি।
-না মা। আমাকে মামার কাছে পাঠিয়েও না। আমি তোমার কাছেই থাকব, কান্না করতে করতে মাকে বলল পিকুল।
৩.
প্রায় ২৫ বছর পর। পিকুল এখন শিক্ষক। সে তার ক্লাসের ছাত্র রশিদকে ডাকছে...
এই আণ্ডা এদিকে আয়!
রশিদ : স্যার আপনি সবাইকে আণ্ডা বলে ডাকেন কেন? এটা কি আপনার মুদ্রাদোষ?
পিকুল : আমাকে আমার স্যার আণ্ডা বলে ডাকতেন। আণ্ডা হলো গৌরবের নাম।
চুপ থাক!! আণ্ডা কোথাকার, মুচকি হেসে ফেলল পিকুল আর ক্লাসের সবাই।