রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

মালয়েশিয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

জনশক্তি রপ্তানিতে অচলাবস্থা কাটবে

মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা অবশেষে তুলে নিয়েছে। সেদেশের শ্রমমন্ত্রী তার সরকারের এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে জানিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, আপাতত নির্মাণ, বনায়ন ও উৎপাদন খাতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেবে মালয়েশিয়া। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কবে নাগাদ মালয়েশিয়ায় কর্মী নেওয়া শুরু হবে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য তিনি জানাননি। বলেছেন, ঈদের পর এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। স্মর্তব্য, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সমঝোতা স্মারকে সই করে দুই দেশ। কিন্তু মাত্র ১২ ঘণ্টা পরই মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় তারা আপাতত কোনো কর্মী নেবে না। এরপর বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়টি ঝুলে থাকে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য ৩৭ হাজার টাকা খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়া কর্মী নিয়োগ বন্ধ হয়ে যায় ২০০৮ সালে। চার বছর বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর জি টু জি পদ্ধতিতে সরকারিভাবে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হলেও দেখা দেয় অচলাবস্থা। এ চুক্তির বদৌলতে তিন বছরে মাত্র ১০ হাজার কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়। বৈধপথে কর্মী পাঠানো প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সক্রিয় হয়ে ওঠে মানব পাচারকারীরা। অবৈধ পথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সময় ট্রলার ডুবে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রাণ হারান। আদম পাচারকারীদের প্রতারণার শিকার হয়ে প্রাণ হারান আরও অনেকে। সারা বিশ্বে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ কর্মী নিয়োগের ঘোষণা দেন। আশা করা যাচ্ছে, আপাতত তিন খাতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হলেও অন্যান্য খাতেও অচিরেই কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের সুনাম থাকায় হারানো শ্রমবাজার ফিরে পাওয়ারই আশা করছেন জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।  দেশের রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রেও তা ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা।  দেশের অন্যতম বৃহত্তম শ্রমবাজার ধরে রাখতে

সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন এমনটিই কাম্য।

সর্বশেষ খবর