বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইতিহাস

শিশু সুলতানের রাজত্ব

১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদ শাহের মৃত্যু হলে তার শিশু পুত্র মাহমুদ শাহ সিংহাসন লাভ করেন। শিশু সুলতানের রাজত্বকালে রাজ্যের সর্বত্র বিশৃঙ্খলা ও গোলযোগ দেখা দেয়। এ সুযোগে প্রাদেশিক শাসনকর্তারা স্বাধীনতা ঘোষণা করতে থাকেন। দাক্ষিণাত্য দল ও বিদেশিদের মধ্যে দলাদলি শুরু হয়। কিন্তু শাসকরা এ গোলযোগ দমন করতে পারলেন না। মাহমুদ গাওয়ান ছিলেন একমাত্র প্রভাবশালী ও সক্ষম শাসক। তার মৃত্যুর ফলে রাজ্যের সংহতি ভেঙে যায়। এই শক্তিশালী ও যোগ্য মন্ত্রীর অপসারণ, সুলতানের নৈতিক অবনতি ও প্রাদেশিক শাসনকর্তাদের মতানৈক্যের ফল বিষময় হয়েছিল এবং অবশেষে রাজ্যের পতন ঘটল।

এ বংশের আঠারোজন সুলতানের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন দুর্বল ও অপদার্থ। মাত্র কয়েকজন ছিলেন যোগ্য ও সুদক্ষ শাসক। কয়েকটি হিন্দু রাষ্ট্রের, বিশেষত বিজয়নগরের সঙ্গে যুদ্ধ এ সময়কার উল্লেখযোগ্য ঘটনা। বিজয়নগরের কয়েকজন রাজাকে বাহমনী রাজ্যের শাসকদের কাছে অপমানজনক পরাজয়বরণ করতে হয়। একজন রাজা ফিরোজ শাহের সঙ্গে তার কন্যার বিয়ে দিতে বাধ্য হন। দাক্ষিণাত্যের বিপদসংকুল পরিস্থিতির মধ্যেও বাহমনী রাজ্যের অধিকাংশ সুলতান ইসলাম প্রচারের গৌরব অর্জন করেন। পঞ্চদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর ইউরোপীয় ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখলে বাহমনী রাজ্যের শাসকদের ধর্মীয় ব্যাপারে উত্পীড়নের জন্য দায়ী করা যায় না। যুদ্ধ ও অভ্যন্তরীণ অশান্তির মধ্যেও বাহমনী রাজ্যের শাসকরা প্রজাদের উন্নতির জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন শিল্প, স্থাপত্য ও শিক্ষার মহান পৃষ্ঠপোষক। বাহমনী রাজ্যের পতনের সঙ্গে সঙ্গে দাক্ষিণাত্যের পাঁচটি স্বাধীন রাজবংশ পর পর মাথা তুলে দাঁড়ায়। এসব বংশ তাদের প্রতিষ্ঠাতাদের উপাধি অনুসারে নাম গ্রহণ করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর