সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

ক্রুসেডের প্রথম যুদ্ধ

ক্রুসেডের প্রথম যুদ্ধেই জেরুজালেম মুসলমাদের হাত ছাড়া হয়। এর প্রায় ২০০ বছর পর জেরুজালেম আবার পুনরুদ্ধার করেন মুসলিম সেনাপতি, অকুতোভয় সেনা নায়ক, সুলতান গাজী সালাহউদ্দীন আল আইয়ুবী। ঝড়গতি সম্পন্ন, আপসহীন অকুতোভয় আইয়ুবী যখন ইসলামের তরবারি হাতে আবির্ভূত হন তখন ক্রুসেডের সাজানো কৌশল বারেবারে কেঁপে ওঠে। চক্রান্তের জাল ছিঁড়ে জেরুজালেম ছিনিয়ে এনে শত বছর পর আবার মুসলমানদের হৃদয়ে প্রশান্তি নিয়ে আনেন গাজী সালাহউদ্দীন আইয়ুবী।

বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস বা দজলা ও ইউফ্রেটিস বা ফোরাত নদী দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে গড়ে ওঠা মেসোপটেমিয়ার তিকরিতে ১১৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন সালাহউদ্দীন ইউসুফ ইবনে আইয়ুব। তার ব্যক্তিগত নাম ইউসুফ, সালাহউদ্দিন হল লকব যার অর্থ ‘বিশ্বাসের ন্যায়পরায়ণ’। তিনি ছিলেন মিসর ও সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে তার সালতানাতে মিসর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া, হেজাজ, ইয়েমেন এবং উত্তর আফ্রিকার অন্য অংশ          অন্তর্ভুক্ত ছিল। সালাহউদ্দীন ছিলেন মুসলিম, আরব, তুর্কি ও কুর্দি সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।

১০৯৯ সালে মুসলমানদের পরাজিত করেন এবং জেরুজালেম তাদের দখলে আনেন ইউরোপিয়ানরা। এ যুদ্ধে গোটা ক্যাথোলিক চার্চ ও পোপ ২য় আর্বানের সমর্থন ও আশীর্বাদ ছিল। বিজয়ের পর ক্রুসেড যোদ্ধারা জেরুজালেমে রক্তের বন্যা বইয়ে দেন। এটা ইউরোপিয়ানদের নিজ বিবরণ অনুযায়ী। শহরে কী নারী, কী পুরুষ, কী শিশু, কী বৃদ্ধ যাকেই পাওয়া গেছে, তাকেই নিধন করা হয়েছে। বহমান রক্তে নাকি সেদিন ঘোড়ার খুর পিছলে যাচ্ছিল। এই ছিল নিধনের নৃশংসতা। বিজয় ধরে রাখা, পরবর্তী যুদ্ধাদি চালিয়ে যাওয়া এবং সর্বোপরি প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে গডফ্রি জেরুজালেমের বাদশাহর পদে সমাসীন হন। অথচ হজরত ওমর (রা.)-এর খেলাফত কালে জেরুজালেম মুসলমানদের দখলে আসে। বিজয় যখন মুসলমানদের আয়ত্তে তখন জেরুজালেমের অধিপতি পেট্রিয়ার্ক সফ্রোনাস। ওমর (রা.) পেট্রিয়ার্ক সফ্রোনাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের জানমাল ও ধর্মীয় নিরাপত্তার বিষয়াদি নিশ্চিত করেন। সেই হতে জেরুজালেমে সব ধর্মের (ইয়াহুদি/খ্রিস্টিয়ান) লোকজনের যাওয়া-আসা, ইবাদত-আরাধনার নিরাপত্তা বিধিত হয় এবং এটা এভাবেই যুগপৎ হয়ে পড়ে।

জাফর খান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর