সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনাকে হত্যাকান্ডের বদলে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু বলে অভিহিত করেছেন ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক রজনীকান্ত মিশ্রা। গত বছরের প্রথম পাঁচ মাসের চেয়ে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে একই সঙ্গে কেন এসব অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তা খুঁজে বের করার অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। রাজধানীর পিলখানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে সীমান্ত হত্যাকান্ড সম্পর্কে বিএসএফ মহাপরিচালকের বৈঠকে সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনাকে অনাকাক্সিক্ষত বলে অভিহিত করে বিএসএফ প্রধান যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে সুবিবেচনার প্রতিফলন ঘটেছে। তবে এ অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু রোধে বিএসএফ কতটা দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে পারছে তা বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। সীমান্ত থাকলেই সমস্যা থাকে এটি একটি চিরন্তন বিষয়। দুই বন্ধুপ্রতিম দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তও তা থেকে মুক্ত নয়। সীমান্ত হত্যাকান্ডে যারা প্রাণ হারাচ্ছেন, তাদের মৃত্যুর কারণ যাই হোক না কেন, বিষয়টা দুই দেশের মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা সৃষ্টি করছে। যে কারণে সীমান্তে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংযমী মনোভাব খুবই জরুরি। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। সীমান্ত সমস্যার পরিসরও দীর্ঘ। ফলে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সীমান্ত সমস্যা মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে হবে। সীমান্তে হত্যাকান্ড বা অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যুর কারণে দুই দেশের মানুষের কাছে যাতে ভুল বার্তা না যায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সীমান্ত অপরাধ দমনে বিজিবি ও বিএসএফের যৌথ উদ্যোগের বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। আমরা আশা করব বিজিবি ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক সীমান্তে প্রাণহানির ঘটনা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। মাদক পাচার এবং অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচার বন্ধেও দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অঙ্গীকার ফলপ্রসূ অবদান রাখবে এমনটিও প্রত্যাশিত। বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ। এ বন্ধুত্বের স্বার্থেই শান্তির সীমান্ত গড়ে তুলতে দুই পক্ষকেই আন্তরিক হতে হবে। সীমান্তের অবাঞ্ছিত ঘটনা রোধে স্থানীয় পর্যায়েও দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর যোগাযোগ নিবিড় করা দরকার।