বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চাকরির বাজারে খরা

কর্মসংস্থানের স্বার্থে জরুরি উদ্যোগ নিন

দেশের চাকরির বাজারে এখন চলছে দারুণ খরা। এর অশুভ প্রক্রিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। যারা চাকরি করছেন তাদের ওপর বিষনিঃশ্বাস ফেলছে ছাঁটাই হওয়ার ভয়। জনশক্তি রপ্তানি ছিল বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের অন্যতম খাত। গত এক বছরে সে খাত পুরোপুরি বন্ধ না হলেও কর্মসংস্থানের হার হতাশাজনক। বরং এ সময়ে চাকরি হারিয়ে কয়েক লাখ মানুষ দেশে ফিরেছে। দেশের শিল্প খাতের জন্য সরকারি প্রণোদনা লাখ লাখ মানুষের জীবিকা নিশ্চিত করলেও সে ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি সুখকর নয়। বেসরকারি খাত ছিল কর্মসংস্থানের প্রধান মাধ্যম। করোনাভাইরাস এ খাতকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলায় কর্মসংস্থানের সুযোগ অন্তত ৯০ শতাংশ কমেছে। বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি সংস্থা, ব্যাংক-বীমা, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিয়োগও স্থবিরতায় ভুগছে। ফলে নতুন চাকরির সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠিত অনেক প্রতিষ্ঠান করোনার কারণে চাকরিচ্যুত করছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এতে বেকারত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিরূপ প্রভাব পড়ছে সব ক্ষেত্রে। শিক্ষিত ও স্বল্পশিক্ষিত দুই শ্রেণির চাকরিজীবীই বাধ্য হচ্ছে ঢাকা ছাড়তে। এমনিতেই প্রতি বছর ২০ লাখ তরুণ-তরুণী চাকরির বাজারে যুক্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে করোনার প্রভাবে বিদেশে কাজ হারিয়ে ফিরেছে লাখ লাখ মানুষ। তারাও চাকরি খুঁজতে পেরেশান হয়ে ওঠায় কর্মসংস্থান খাতের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। কর্মহীনতার কারণে দারিদ্র্যের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে বাড়ছে হতাশা। সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। করোনাকালে মহামারী ঠেকানোর চেয়েও জরুরি হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন-জীবিকা সচল রাখা। বিশেষ করে কর্মসংস্থানের খাতগুলো দ্রুত সচল হয়ে না উঠলে দেশের অর্থনীতিতে যেমন বিরূপ প্রভাব পড়বে তেমন মাত্রাতিরিক্ত বেকারত্ব রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার বেদিমূলে আঘাত হানবে। এমনিতেই করোনাকালের আগেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে যে পরিমাণ উচ্চশিক্ষিত জনগোষ্ঠী চাকরির বাজারে হাজির হতো, তা ছিল মাত্রাতিরিক্ত। করোনাকালে চাকরির সুযোগ কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠছে। এ অবস্থার উত্তরণে সরকারের মনোযোগ

এ ক্ষেত্রে আরও বেশি নিবিষ্ট হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর