সোমবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

তুরাগ-বুড়িগঙ্গার সীমানা পিলার

বিতর্কের অবসান ঘটাতে হবে

ঢাকার চারপাশের নদ-নদী দখলদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে এখন পর্যন্ত বসানো ৩ হাজার ৮৪টি সীমানা পিলারের মধ্যে ১ হাজার ৪২৩টিই প্রশ্নবিদ্ধ। অভিযোগ উঠেছে, এসব পিলার আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ফোরশোর বা নদীর মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে, যা নদী উদ্ধারের পরিবর্তে দখলের সুযোগ আরও পাকাপোক্ত করেছে। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা তীরে রয়েছে ৩১২টি ও তুরাগ তীরে ১ হাজার ১১১টি। তুরাগ নদের সীমানা পিলার স্থাপন নিয়ে রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে এসব পিলারের অনেকটা ডুবে যাচ্ছে। এগুলোর বাইরে বেড়িবাঁধেও ৩৯০টি বিতর্কিত পিলার পাওয়া গেছে। এর কোনোটি বেড়িবাঁধের ঠিক ওপরে যেখানে কখনই নদীর পানি আসে না, আবার কোনোটি বেড়িবাঁধের একেবারে ২০-৩০ ফুট নিচে বসানো হয়েছে। সরেজমিন পর্যবেক্ষণ, বিভিন্ন মৌসুমে তোলা পিলারের ছবি, জিপিএস সার্ভে, গুগল আর্থ স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে আরডিআরসির ওই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। ২০০৯ সালে হাই কোর্টের রায়ে ঢাকার চার নদীর দখলদারদের উচ্ছেদ করে নদীগুলোকে টেকসইভাবে সীমানা পিলার তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তখন বুড়িগঙ্গা এবং তুরাগে প্রায় ৬ হাজার পিলার স্থাপন করা হয়। ওই সময় অধিকাংশ পিলার নদীতে কিংবা প্লাবনভূমিতে স্থাপন করা হয়। বিতর্কের মুখে টাস্কফোর্সের মিটিংয়ে গঠিত কমিটি ২০১৪ সালে একটি রিপোর্টে বলে- স্থাপন করা পিলারের অধিকাংশই ভুলভাবে স্থাপিত হয়েছে। পোর্ট রুল ১৯৬৬ ও বাংলাদেশ পানি আইন ২০১৩-তে নদী ও ফোরশোর একসঙ্গে রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘদিনের দখলে-দূষণে মৃতপ্রায় ঢাকার চার নদীকে দখল ও দূষণমুক্ত করে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে।  ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও মাঝপথেই সীমানা পিলার নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, এ বিতর্কের অবসান কাম্য।

সর্বশেষ খবর