বুধবার, ১৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

টিকা উৎপাদন

দেশের সক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে

গত ৫০ বছরে স্বাস্থ্য খাতে আমাদের যেমন উল্লেখযোগ্য সাফল্য আছে, তেমনি ব্যর্থতার পাল্লাও কম নয়। সাফল্যের মধ্যে আছে বাংলাদেশের ওষুধশিল্প বেশ সমৃদ্ধ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে অনেক দেশে আমরা ওষুধ রপ্তানি করছি। আর ব্যর্থতা হলো স্বাস্থ্য খাতের অনেক সফল প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের কিনারে চলে এসেছে নীতিনির্ধারকদের অবহেলা, অনিয়ম, অদক্ষতা ও ভ্রান্ত নীতির কারণে। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ছয় ধরনের টিকা উৎপাদন করত, যার মধ্যে ছিল গুটিবসন্ত, কলেরা, টাইফয়েড, প্যারাটাইফয়েড ও জলাতঙ্ক রোগের টিকা। এর মধ্যে গুটিবসন্ত নির্মূল হওয়ায় এ টিকার উৎপাদন বন্ধ করা যৌক্তিক। কিন্তু অন্যান্য টিকার উৎপাদন কেন বন্ধ করা হলো? প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের থাবা থেকে বাঁচতে জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে টিকা গ্রহণ। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশে দেখা দিয়েছে সংকট। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে চীন-রাশিয়ার টিকা উৎপাদন নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা যাচাই সম্পন্ন করেছে সরকার। এদিকে চীন থেকে পাওয়া উপহারের টিকা ২৫ মে দেওয়া শুরু হচ্ছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ৮ জানুয়ারি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দেয়। সেরামের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ নিশ্চিত না হওয়ায় গত ২৭ এপ্রিল রাশিয়ার মস্কোর গামালিয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি স্পুটনিক-ভি ও ২৯ এপ্রিল চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্টের উৎপাদিত সিনোফার্মের টিকাকে জরুরি প্রয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়। এ অবস্থায় রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ও চীনের সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে টিকা তৈরি করলে দীর্ঘ সময় লাগবে। উৎপাদন করলেও পাঁচ-ছয় মাসের আগে করা সম্ভব নয়। দেশে টিকা উৎপাদন করা হলে খরচ কম পড়বে। দেশের অনেক অর্থ সাশ্রয় হবে। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হারানো ‘ঐতিহ্য’ ফিরিয়ে আনা হোক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর