রবিবার, ৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

প্লাস্টিক বর্জ্য

পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সচেতন হতে হবে

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০২ সালে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের বিধান করেছিল। প্রায় দুই দশক পর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, দেশের পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যরে ৮৭ শতাংশই পরিবেশবান্ধব সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে ফেলা হয় না। এ বর্জ্য পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি করছে। বাংলাদেশে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করার পর এ নিয়ে কোনো সামগ্রিক গবেষণা হয়নি। বিভিন্ন খাত নিয়ে বিচ্ছিন্ন কিছু গবেষণা হয়েছে। তাই নীতিনির্ধারকরা এর ক্ষতিকারক দিকগুলো ঠিকমতো বুঝতে পারেননি। ফলে এখনো দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিয়ে সচেতনতার অভাব দেখা যাচ্ছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গলদ ও নগরবাসীর অসচেতনতায় ভয়ংকর পরিণতির পথে এগোচ্ছে প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ। চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। পলিথিনের ব্যবহার বন্ধে হাই কোর্টের একটা নির্দেশনা আছে। তার পরও মানুষের সচেতনতা বাড়েনি। মাটির নিচে প্লাস্টিক ৫০০ বছরেও পচে না তাই প্লাস্টিকের কারণে ধ্বংস হচ্ছে মাটি ও পানির জৈবগুণ। খাবারের সঙ্গে প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা মানুষের দেহে ঢুকে ক্যান্সার ও অন্যান্য জটিল রোগ তৈরির কারণ হয়ে উঠছে। সম্প্রতি ইতালির বিজ্ঞানীরা গর্ভস্থ শিশুর গর্ভফুলে প্লাস্টিক কণা পেয়েছেন। প্লাস্টিক বর্জ্যরে ওপর একাধিক গবেষণা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ বছর সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা মাছসহ নানা প্রাণীর দেহে প্রবেশ করছে। খাদ্যচক্রের মাধ্যমে তা মানুষের শরীরে যাচ্ছে। এগুলো ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। সরকারি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার গলদে ঠেকানো যাচ্ছে না প্লাস্টিকের দূষণ। আইন কেবল কিতাবে রেখে কোনো লাভ নেই। যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেললে কারও শাস্তি হয় না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জনসম্পৃক্ততা ও জনসচেতনতা বাড়ানোর ব্যাপারে সরকারের ভীষণ অনীহা। প্লাস্টিক বর্জ্যে নদী যাতে ভরাট না হয় কর্তৃপক্ষকে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর