করোনাকালে মানুষের আয় কমে গেছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। যাদের চাকরি আছে, তাদেরও বেতন বা মজুরি কমেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও মন্দা চলছে। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লে তা সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপের সৃষ্টি করে। দুঃখের বিষয়, দেশের খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে যেসব পণ্যের দাম বাড়েনি, সেসব পণ্যের দাম কেন দেশি বাজারে বাড়বে? এর পেছনেই সিন্ডিকেটের কারসাজি আছে। আগে ছোটবড়ো সব ধরনের ব্যবসায়ী আমদানি করতেন। এখন গুটিকয়েক বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট করে পণ্য আমদানি করে এবং ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দেয়। রাজধানীতে ভরা মৌসুমেও এবার বেশির ভাগ সবজির দর বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে তো বাড়ছেই, প্রতিদিন কিছুটা করে বেশি দাম দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। শসা, ফুলকপি, শিম, ভোজ্য তেলসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে শসার কেজি বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম অপরিবর্তিত রয়েছে পাকা টমেটো, গাজর, মুলা, শালগমের। সাধারণত পণ্যের সরবরাহ কমলে দাম বাড়ে আর সরবরাহ বাড়লে দাম কমে। কিন্তু বাংলাদেশে সব সময় এ নিয়ম খাটে না। বর্তমানে বাজারে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে এর কোনোটির সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই। গত কয়েক বছর মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় থাকায় সরকার এক ধরনের সন্তুষ্টির মধ্যে ছিল। কিন্তু এখন যেভাবে প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে, তখন আর আগের সন্তুষ্টি নিয়ে আত্মতৃপ্ত থাকার সুযোগ নেই। পণ্যের দাম বাড়লে সীমিত আয়ের মানুষ তথা নিম্নবিত্ত মানুষই বেশি কষ্ট পায়। তাই বাজার নিয়ে বেশি কথা না বলে মন্ত্রীদের উচিত বাজার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা। পণ্যের সরবরাহ ঠিক থাকলে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াতে পারবেন না।