সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বাণিজ্যিক কৃষির সম্প্রসারণেই তৈরি হবে আগামীর কৃষিশিল্প

শাইখ সিরাজ

বাণিজ্যিক কৃষির সম্প্রসারণেই তৈরি হবে আগামীর কৃষিশিল্প

গত এপ্রিলের কথা। নেদারল্যান্ডসে সাত দিনের ট্যুরের তৃতীয় দিন। সকালের নাস্তা সেরে হোটেল থেকে বের হলাম। নির্ধারিত গাড়িতে চড়ে বসলাম। আমাদের যাত্রা অ্যাগ্রোপার্ক লিংগেজেনের দিকে। কৃষিকে ঘিরেই নেদারল্যান্ডসের যত কাজ কারবার। কৃষি গবেষণা, কৃষি প্রযুক্তির বিকাশ থেকে শুরু করে কৃষি কর্মকান্ড ও কৃষিবাণিজ্যের এক সূতিকাগার এ নেদারল্যান্ডস। ২০১৫ সালে যখন নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার সুযোগ হয়, তখন সেখানকার কৃষি কর্মকান্ড দেখে বিস্মিত হয়েছিলাম। এ সাত বছরে বিস্ময়ের পরিমাণটা আরও বহুগুণে বেড়েছে। কৃষি গবেষণা, প্রযুক্তির প্রসার আর কৃষি নিয়ে নানামুখী কর্মকান্ডে বহুদূর এগিয়েছে দেশটি। কত দ্রুত তারা উন্নত থেকে উন্নততর হয়ে উঠছে ভাবতে ভাবতে আমরা পৌঁছে গেলাম এডে সেন্ট্রাল স্টেশন এলাকায়। সেখান থেকে যুক্ত হলেন সেদিনকার হোস্ট পিটার স্মিটস। পায়ে চামড়ার বুট, পরনে জিন্স আর গায়ে সবুজাভ লেদারের হ্যারিংটন জ্যাকেট। শুভ্র শাদা চুল, নীল চোখের ষাটোর্ধ্ব পিটারকে দেখে মনে হচ্ছিল তারুণ্য এখনো যেন তার চলনে-বলনে। পিটারের সঙ্গে পরিচয় পর্ব শেষ হলে আবার গাড়ি চলতে শুরু করল। পিটার জানিয়ে দিলেন, ‘আপনাদের সবকিছু প্রায় গাড়ি থেকেই দেখতে হবে। জানেন নেদারল্যান্ডস খাদ্য উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রে জৈব নিরাপত্তা শতভাগ মেনে চলে। ফলে খাদ্য প্রসেসিং সেন্টার বা উৎপাদন কেন্দ্রের ভিতরে আপনাদের নিয়ে যেতে পারব না।’ পিটারের কথা শুনে আমরা সবাই হতাশ হলাম। যদি প্রসেসিং সেন্টার বা গ্রিন হাউসের ভিতরে যেতে না পারি তবে ক্যামেরায় কী ধারণ করব! গাড়ির ভিতর থেকে ক্যামেরা ধরে তো আর প্রতিবেদন তৈরি করা যায় না। কিন্তু করার কিছু নেই। এ ব্যাপারে তারা ভীষণ কঠোর।

প্রথমেই গেলাম ভেনলো এলাকার অ্যাগ্রো প্রসেসিং পার্কে। আমাদের দেশে যেমন এক্সপোর্ট জোন কিংবা শিল্পনগরী গড়ে উঠেছে, ভেনলোর ‘ফ্রেশ পার্ক’ও ঠিক সে রকমই। পিটার জানালেন, নেদারল্যান্ডসে আরও ছয়টি অ্যাগ্রো প্রসেসিং পার্ক রয়েছে। গ্রিন হাউস বা খামার থেকে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সর্টিং ও প্যাকেজিংয়ের জন্য চলে আসে প্রসেসিং পার্কে। একদিকে অনলাইনে চলে কেনাবেচা, অন্যদিকে বিক্রি হয়ে যাওয়া কৃষিপণ্য প্যাকেজিং শেষে বড় বড় সব লরিতে করে চলে যায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বাজারে। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত, ফলে গাড়িতে বসেই ঘুরে দেখতে হচ্ছে সব। চলতে চলতেই অ্যাগ্রো প্রসেসিং পার্ক ও নেদারল্যান্ডসের কৃষি কর্মকান্ড সম্পর্কে নানান তথ্য দিচ্ছিলেন ড. পিটার স্মিটস। ‘এই ভেনলো ফ্রেশ পার্ক আসলে অন্যরকম একটি অ্যাগ্রোপার্ক। প্রথমে সারা দেশ থেকে কৃষিপণ্য এখানে জমা করা হয়। তারপর এখান থেকে কৃষিপণ্যগুলো সারা দেশের বাজারে এবং বিদেশে পাঠানো হয়। বড় লরিগুলো দেখছেন, ওগুলো তাজা সবজি নিয়ে চলে যাচ্ছে এক্সপোর্ট জোনে আর ছোট লরিগুলো যাচ্ছে সুপারশপে। ছোট লরিগুলোতে বিভিন্ন রকম সবজি ও ফল আছে। হয়তো ১-২ ক্যারেট টমেটো, ক্যাপসিকাম, কমলা, শসা কিংবা অন্য কোনো ফল-ফসল যার যেমন চাহিদা। সবজি ও ফলমূল সতেজ রাখতে নিয়ন্ত্রিত আর্দ্রতা ও তাপমাত্রা এখানে আছে। মূলত ডিস্ট্রিবিউশনের কাজটা এখান থেকেই হয়।’ পিটারের কথা শুনছিলাম আর মনে মনে আফসোস করছিলাম কাছ থেকে তাদের কর্মকান্ড না দেখতে পারায়। পিটার দূরের একটা ভবন দেখিয়ে বলছিলেন, ‘ওই যে দেখুন, জন লেখা একটি ভবন। রয়্যাল জন হচ্ছে একটি সমবায় প্রতিষ্ঠান। দক্ষিণ-পূর্ব নেদারল্যান্ডসের কিছু কৃষক মিলে গত শতাব্দীর ষাটের দশকের গোড়ার দিকে সমবায় ভিত্তিতে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিল। ধীরে ধীরে বড় হয়ে ওঠে তাদের প্রতিষ্ঠান। বড় একটি স্বপ্ন নিয়ে তারা এগিয়ে আসে। ৭৫ হেক্টর জমি কিনে শুরু করে তাদের কার্যক্রম। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও ৪০০ কৃষক। তাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো বিক্রির জন্য প্রথমেই তারা অকশন হাউস গড়ে তোলে। প্রতিদিন সকাল বেলা এখানে ৪০-৫০ জন লোক আসে। তারা মূলত কম্পিউটারে কাজ করে। অনলাইনে সব বেচাবিক্রি হয়ে যায়। আর সারা দেশে সেগুলো ডিস্ট্রিবিউট হয়।’

কথায় বলে ‘কথায় চিঁড়ে ভিজে না’, পিটারের কথায় আমাদের মন ভরছিল না। বললাম, ভিতরে না ঢুকি, কোথাও অন্তত দাঁড়িয়ে দেখি তারা কী করছে!’ পিটার অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাজি হলেন। আমরা গাড়ি রাখার নির্ধারিত একটা জায়গায় থামলাম। পিটার নির্ধারণ করে দিলেন ৫ মিনিটের বেশি সময় এখানে দাঁড়ানো যাবে না। গাড়ি থেকে নেমে দেখলাম প্রসেসিং সেন্টার থেকে প্যাকেটজাত ও ক্যারেটজাত সবজি-ফল ছোট-বড় লরিগুলোতে সাজানো হচ্ছে। কাচের ভবনের বাইরে থেকে ভিতরে যতটুকু দেখা যায় দেখার চেষ্টা করলাম। লোকজন খুবই কম। যন্ত্রই সবকিছু করছে, অর্থাৎ রোবটই কাজকর্ম সব করছে।

 

মিনিট পাঁচ পরেই পিটার তাড়া দিলেন। যেতে হবে। আবার গাড়িতে উঠলাম। পিটার আমাদের নিয়ে গেলেন বারেনড্রেখ্ট এলাকায়। সেখানে বিশাল বিশাল সব গ্রিন হাউস। বাইরে থেকে দেখে মনে হয় বড় বড় সব কারখানা। কারখানাই বটে তবে ফসল উৎপাদনের কারখানা। পিটার বলছিলেন এখানে কোনো গ্রিন হাউসই ৫ হেক্টরের কম নয়। সকালের রোদ পড়ে চিকচিক করে উঠছে একেকটা গ্রিন হাউস। সারি সারি অসংখ্য গ্রিন হাউস। ২০১৪-২০১৫ সালের দিকে নেদারল্যান্ডসে এত বেশি গ্রিন হাউস নির্মাণের হিড়িক পড়ে যে, দেশটি পরিচিত হয়ে উঠছিল গ্লাস হাউসের দেশ হিসেবে। পরবর্তীতে গ্রিন হাউস নির্মাণে নিয়ন্ত্রণ আনা হয়। পিটার আমাদের পুনরায় হতাশ করলেন। বললেন, এখানেও কোনো গ্রিন হাউসে আপনারা প্রবেশ করতে পারবেন না। বাইরে থেকে দেখতে পাচ্ছি গ্রিন হাউসের কোনোটিতে শসা, কোনোটিতে টমেটো, কোনোটিতে ক্যাপসিকাম চাষ হচ্ছে। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করে তাদের চাষ পদ্ধতি আমার দেশের কৃষককে দেখাতে পারব না। কোনো মানে হয়! পিটারকে বুঝিয়ে বললাম, আমি যদি ক্যামেরায় কোনো কিছু ধারণ করতে না পারি, আমার দর্শককে না দেখাতে পারি, তবে শুধু বাইরে থেকে আমি দেখে গেলে লাভ কী! পিটার ব্যাপারটা বুঝলেন। কারও সঙ্গে ফোনে কথা বললেন। আমাদের জানালেন, ‘ঠিক আছে আপনাদের একটা ক্যাপসিকামের গ্রিন হাউসে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছি। তবে কোনো কিছুতেই হাত দেওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট লাইন অতিক্রম করা যাবে না।’ আমরা রাজি হলাম। কোনো কিছুতেই হাত দেব না। কোনো সীমাই আমরা অতিক্রম করব না। কেবল ক্যামেরায় দর্শকদের জন্য ভিডিও ফুটেজ ধারণ করব। গাড়ি পুনরায় চলতে থাকল। পিটার বলে চললেন, ‘এখানে যে গ্রিন হাউসগুলো দেখছেন কোনোটিই কিন্তু ৫ হেক্টরের নিচে নয়। সবচেয়ে বড়টি ১২৫ হেক্টর জমির ওপর। সেচের জন্য ব্যবহার হচ্ছে বৃষ্টির পানি। ওই যে নালাগুলো দেখছেন, ওগুলোতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা আছে। ওখানকার পানিতে মাছ চাষও হচ্ছে। আর সোলার প্যানেলে উৎপাদন হচ্ছে বিদ্যুৎ। এখানে গ্রিন হাউসগুলো শুধু খাদ্যই উৎপাদন করছে না, বলা যায় একেকটা গ্রিন হাউস একেকটা পাওয়ার হাউস। এখানে যত গ্রিন হাউস দেখছেন, তারা তাদের বিদ্যুৎ চাহিদার শতকরা ৯০ ভাগ নিজেরাই উৎপাদন করে। বাকি ১০ ভাগ পূরণ হয় প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। এখানকার গ্রিন হাউস উদ্যোক্তারা খুব খুশি, কারণ বিদ্যুতের জন্য তাদের খরচ করতে হয় না। এখানে বিদ্যুতের অনেক দাম। আপনি জানেন, তরুণরা আগে কৃষির প্রতি অত আগ্রহী ছিল না, কিন্তু প্রযুক্তির কৃষি তরুণদের দারুণ আগ্রহী করে তুলেছে। এখন কৃষিতেই ভবিষ্যৎ দেখছে তারা। আর একটা বিষয়; বলুন তো মানুষ কেন গ্রামে থাকতে চায় না? কারণ স্কুল-কলেজ-হাসপাতালসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাই হচ্ছে শহরকেন্দ্রিক। এ কারণে তরুণরা সব শহরের দিকেই ধাবিত হচ্ছে। আবার এ তরুণদের হাতে কৃষিও হয়ে উঠছে অনেকটা নগরকেন্দ্রিক।’

আমি বললাম, ‘এখন তো শহর প্রসারিত হচ্ছে। গ্রামের কৃষি জমিগুলোতে হচ্ছে ঘরবাড়ি, কল-কারখানা। বিশেষ করে আমি বাংলাদেশের কথা বলছি- শহরের বাড়িগুলোর ছাদে যদি কৃষি আয়োজন করা যায় তাহলে তো শহর কিছুটা হলেও সবুজ হবে। সতেজ শাক-সবজি থেকে শুরু করে ফলমূলও পাওয়া যেতে পারে।’

 

পিটার একমত হলেন। বললেন, ‘হ্যাঁ। এটা নিঃসন্দেহে দারুণ ব্যাপার। এটিও নগরকৃষির অংশ। এভাবে নগরের মানুষও কৃষির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। তবে খাদ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে বাণিজ্যিক কৃষির বিকল্প নেই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চাইলে অবশ্যই বাণিজ্যিক কৃষির প্রসার প্রয়োজন।’

আমরা এসে পৌঁছলাম বেমোলে অবস্থিত ফির্মা ফান ডার হার্ঘ নামের গ্রিন হাউসে। এ গ্রিন হাউসে প্রবেশের অনুমতি আমরা পেয়েছি। গ্রিন হাউসে প্রবেশের আগে পিটার দেখালেন কার্বন ডাই অক্সাইডের একটা বড় সিলিন্ডার। বললেন, ‘এই যে ট্যাংকটি দেখছেন, এটা কার্বন ডাই অক্সাইডে পূর্ণ। গ্রিন হাউসে সবজি চাষ করতে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড প্রয়োজন। তারা এ কার্বন ডাই অক্সাইড সংগ্রহ করছে প্রাকৃতিক গ্যাস পুড়িয়ে। প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতিক গ্যাস থেকেই বিদ্যুৎ, তাপ ও কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করা হয়। উৎপাদিত বিদ্যুৎ ন্যাশনাল গ্রিডে যুক্ত হয়। তাপ গ্রিন হাউসে ব্যবহার করা হয়। আর কার্বন ডাই অক্সাইড এভাবে সংরক্ষণ করা হয়। আগেই বলেছি এরা আসলে শুধু ফসলই উৎপাদন করে না, এরা পাওয়ারও উৎপাদন করে।’ আমরা গ্রিন হাউসে প্রবেশ করলাম। একটা হলুদ লাইন দেখিয়ে পিটার বললেন যেন তা অতিক্রম না করি। খুব সতর্কতার সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছিল যেন রোবট চলার পথে আমরা ঢুকে না পড়ি। একটু এগিয়ে যেতেই দেখা হলো এক তরুণের সঙ্গে। বয়স ৩৫-৪০ এর কাছাকাছি। বেশ প্রাণোচ্ছল তরুণ। আমাদের অভ্যর্থনা জানালেন। তরুণের নাম ইয়ন ফান ডের অলেখ। তিনিই এ গ্রিন হাউসটির স্বত্বাধিকারী। বেশ আন্তরিক। জানালেন, ৮.৬ হেক্টর জমির গ্রিন হাউসটিতে প্রায় দুই লাখ ক্যাপসিকামের গাছ আছে। গ্রিন হাউসের দুই পাশে ক্যাপসিকামের চাষ। মাঝখানে চলছে বাছাই আর প্যাকেজিং। গাছ থেকে তোলা ক্যামসিকাম নিয়ে আসছে রোবট। প্রোগ্রামিং করা। একটার পর একটা ঢেলে দিচ্ছে সর্টিং প্যানেলে। কোনোটিই কোনোটির সঙ্গে ধাক্কা খাচ্ছে না। একটি রোবট চলে যাচ্ছে বাগানের দিকে ফসল তুলে আনতে, হয়তো আর একটি রোবট ফসল তুলে নিয়ে ফিরছে। দুটি রোবট ক্রস করার সময় একটা থেমে যাচ্ছে। একটা রোবট চলে যাওয়ার পর অন্যটি যাচ্ছে। যেন প্রত্যেকটিই নিয়ম মেনে চলছে।

গ্রিন হাউসটি ঘুরে দেখতে দেখতে ইয়ন জানালেন এখান থেকে প্রতিবছর ২.৫ হাজার টন ক্যাপসিকাম উৎপাদন করেন তিনি। তারা শুধু লাল ক্যাপসিকামের চাষই করেন। উৎপাদিত ক্যাপসিকাম চলে যায় নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম এবং জার্মানির বাজারে। একটি গাছ দেখিয়ে ইয়ন বললেন, এ যে গাছটা দেখছেন ‘এটাতে বছরে ২০-২৫টি ক্যাপসিকাম ধরে।’ জানতে চাইলাম, একটি গাছ রোপণের পর কত বছর ফলন দেয়? জানালেন, ‘শুধু এক বছর। আমরা সাধারণত ডিসেম্বরে গাছ রোপণ শুরু করি। ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি। ফেব্রুয়ারিতে গাছগুলো বড় হয়ে ওঠে। এবং তখন ফুল আসতে শুরু করে। ক্যাপসিকাম উৎপাদন শুরু হয় মার্চ থেকে। মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। এরপর আমরা নতুন করে পরবর্তী ফলনের জন্য গ্রিন হাউসকে প্রস্তুত করি। আর্দ্রতা ধরে রাখতে উপর থেকে পানি স্প্রে করা হয়। সেচ মূলত ড্রিপওয়াটার ইরিগেশন। সবটাই স্বয়ংক্রিয়। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত। কম্পিউটারই বলে দিচ্ছে কোন উপকরণ কতটুকু লাগবে। আমি শুধু কম্পিউটারে বসে সেটিংস ঠিক করে দিই। সেচের পানিতেই সার ও সব ধরনের পুষ্টিকণা মেশানো আছে।’

এবার ফেরার পালা। বিকাল নেমে গেছে। গাড়িতে করে ফেরার পথে চোখে পড়ল বিকালের সোনালি রোদ সারি সারি গ্রিন হাউসের কাচে পড়ে চিক চিক করছে। যেন অন্যরকম এক সোনালি সমৃদ্ধির বারতা দিচ্ছে। আমি ভাবছিলাম, আমাদের দেশও নেদারল্যান্ডসের মতোই একটি বদ্বীপ। ওরা কৃষি বাণিজ্যে কতদূর এগিয়ে গেছে! কৃষি শিল্পে ওদের সমৃদ্ধি আজ বিশ্বজুড়ে! কবে আমাদের দেশে এমন বাণিজ্যিক কৃষির ক্ষেত্র তৈরি হবে!

 

লেখক : মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।  

[email protected]

সর্বশেষ খবর