শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

লাগামহীন চিকিৎসা ব্যয়

মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী

লাগামহীন চিকিৎসা ব্যয়ে হাঁপিয়ে উঠছে মানুষ। অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের মতো চিকিৎসাও একটি মৌলিক মানবাধিকার। আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামীরা পাকিস্তানি দুঃশাসনের ২৩ বছরে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও লড়েছেন। স্বাধীনতার পর চারদিকের হাহাকার অবস্থায়ও স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। গত ৫০ বছরে দেশের প্রতিটি সরকার স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ইতিবাচক মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে। তার পরও ব্যবস্থাপনার ত্রুটির কারণে সরকারের বিপুল বিনিয়োগের সুফল সাধারণ মানুষ সেভাবে পাচ্ছে না। সরকারের নিজস্ব গবেষণা অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতে ব্যক্তির নিজের পকেটের ব্যয় বেড়েই চলেছে। চিকিৎসা ব্যয়ের প্রায় ৬৯ শতাংশ ব্যক্তি নিজে বহন করেন। এ ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে প্রতি বছর ৮৬ লাখের বেশি মানুষের আর্থিক অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। ব্যয় বেশি হওয়ার কারণে ৩ কোটির বেশি মানুষ প্রয়োজন হলেও চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে যান না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণাভিত্তিক দুটি প্রবন্ধ গত বছরের ২২ নভেম্বর রাজধানীর একটি সেমিনারে উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়েছিল, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা অর্জনে বাংলাদেশে প্রধান অন্তরায় ব্যক্তির উচ্চমাত্রায় নিজস্ব ব্যয়। সরকারিভাবে স্বাস্থ্য খাতকে সঠিক গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে না। ফলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকারি ব্যয়ে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। দেশের মানুষের ঘাড়ের ওপর খড়্গ হয়ে ঝুলে রয়েছে ওষুধের দাম। বাংলাদেশে বর্তমানে যে ওষুধ তৈরি হয় তার দামের অন্তত ৪০ ভাগ উৎকোচ হিসেবে পৌঁছে যায় চিকিৎসকদের পকেটে। ফলে তাদের সিংহভাগ ভালোমন্দ বিবেচনা না করে যে কোম্পানির কাছ থেকে উপহার বা উৎকোচ পান সে কোম্পানির ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে দেন। ব্র্যান্ড নামের বদলে জেনেরিক নামে ওষুধ প্রেসক্রাইবের ব্যবস্থা করলে এ নৈরাজ্যের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে। দেশবাসীর শত শত কোটি টাকা তাতে বাঁচবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর