শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সড়ক বন্ধক রেখে ঋণ

অপকর্মের কুশীলবদের চিহ্নিত করুন

মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখেও যে ব্যাংক ঋণ পাওয়া যায় সে অনন্য নজির স্থাপন হয়েছে সব সম্ভবের এই দেশে। এ দেশে ১০ কিংবা ২০ হাজার টাকা ঋণ নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষের স্যান্ডেলের তলা ক্ষয় হয়। অথচ অনায়াসে কোটি কোটি টাকার ঋণ পাওয়া যায় জাল দলিল কিংবা কাগজপত্র দাখিল করে। এসব ক্ষেত্রে যিনি ঋণ নেন, তার চেয়েও গরজ বেশি থাকে তাদের, যারা ঋণদানের প্রক্রিয়ায় জড়িত। কারণটিও ওপেন সিক্রেট। এ ব্যাপারে পত্রপত্রিকায় এমনকি টেলিভিশন পর্দায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙে না। এ ধরনের একটি ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের ঘুম ভাঙতে আদালতকে আদেশ দিতে হয়েছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সরকারি জমি বন্ধক রেখে ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। এ বিষয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মামলাটি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। এ আদেশের পাশাপাশি ওই দুর্নীতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিএফআইইউসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ‘মহাসড়ক বন্ধক দেখিয়ে লুটপাট ১৫ কোটি টাকা’ শিরোনামে গত ১৬ এপ্রিল একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ২১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ওবায়েদ আহমেদ বাদী হয়ে রিট করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। ব্যাংকে যে অর্থ জমা থাকে সেগুলো সাধারণ মানুষের। যাকে-তাকে ঋণ দিয়ে এ অর্থ লোপাটের অধিকার কারও থাকা উচিত নয়। মহাসড়কের জমি বন্ধক রেখে যারা ঋণ নিয়েছেন ও দিয়েছেন অপকর্মের সেসব কুশীলবের বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত। যথার্থ আদেশদানের জন্য আদালতকে অভিনন্দন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর