ইনসুলিন ও ডায়াবেটিসের সম্পর্ক অনেকটা তাপ ও তাপমাত্রার সম্পর্কের মতো। ইনসুলিন হলো একটি হরমোন, যেটি মানবদেহের অগ্ন্যাশয়ের আইলেটস অব ল্যাঙ্গারহান্টসের বিটা কোষ থেকে নিঃসৃত হয়। আমরা যে খাদ্যই খাই না কেন, তার বেশির ভাগ অংশই শর্করায় পরিণত হয় এবং ইনসুলিন হরমোন এ শর্করাকে সারা শরীরের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেয়। কোষে শর্করা জারিত হয়ে শক্তিরূপে সঞ্চিত থাকে। আমাদের শরীরে ইনসুলিন ছাড়া রক্তে শর্করা পৌঁছে দেওয়ার আর কোনো উপায় নেই। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ হয় না এবং সারা জীবন ইনসুলিন নিতে হয়। টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ইনসুলিন নিঃসরণ কম হয় বা ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে ওষুধ বা ইনজেকশনের সাহায্যে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ানো হয়। বর্তমানে বাজারে যেসব ইনসুলিন পাওয়া যায়, তা কোনোরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং তার সঙ্গে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা প্রতিরোধ করে। আপনি কী ব্যবহার করেন? ব্যবহার করলে কী ইনসুলিন কতটা নেন? প্রথমেই জানতে হবে কী ধরনের ইনসুলিন আপনার চিকিৎসক আপনাকে ব্যবহার করতে বলেছেন, কতটা এবং কতবার। ইনসুলিনের মাত্রা নির্ণীত হয় একক দিয়ে। পেট, থাই বা হাতের ওপরের অংশে সিরিঞ্জের মাধ্যমে নির্দিষ্ট মাত্রায় শরীরে ইনসুলিন প্রবেশ করে।
প্রতিবার ইনসুলিন নেওয়ার সময় সিরিঞ্জের সূক্ষ্ম মুখটি ক্রমে ভোঁতা হতে থাকে। তাই তিন-চারবার নেওয়ার পর নিডল একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার করা উচিত নয়। ডায়াবেটিস রোগীদের ঘন ঘন রক্তে শর্করার পরিমাণ চিকিৎসকের পরামর্শে মাপতে হয়। কারণ এর ওপরই নির্ভর করে ইনসুলিনের মাত্রা। সুতরাং গ্লুকোমিটারের সাহায্যে রক্তশর্করা নির্ণয় সম্পর্কে রোগী ও তার পরিবারকে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। ইনসুলিন কোথায় রাখবেন এবং ব্যবহার করার কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি : ইনসুলিনের শিশি ফ্রিজ থেকে বের করে ঘরের তাপমাত্রায় না এনে ব্যবহার করা যাবে না। ইনসুলিন কখনো অতিরিক্ত ঠান্ডা (ডিপ ফ্রিজ) কিংবা অতিরিক্ত গরমে (গাড়ির ডিকি বা যেখানে রোদ আসছে) রাখবেন না। ইনসুলিন ব্যবহারের আগে যদি দেখেন তা দলা পাকিয়ে গেছে, তবে তা ব্যবহার করবেন না। সবসময় ইনসুলিনের অতিরিক্ত একটি শিশি ফ্রিজে রাখবেন। ইনসুলিন কখনো কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। ইনসুলিন ইনজেকশন নেওয়ার পদ্ধতি ও ইনজেকশনের জায়গা নির্বাচন : ইনসুলিন নিতে হয় চামড়ার নিচে ফ্যাটে।
