স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো তরুণ এমনকি শিশুরাও ওই দুই ঘাতক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নানা কারণে তরুণদের স্ট্রোকের সংখ্যা বেড়েছে। ৪০ বছরের নিচে স্ট্রোক রোগী শতকরা ১০ ভাগ। একই সঙ্গে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও বেড়েছে। ৪০ বছরের নিচে স্ট্রোক দুই ধরনের হয়- রক্ত জমাট বেঁধে ও রক্তনালি ফেটে গিয়ে। আমাদের দেশে ঢাকার বাইরে স্ট্রোকের চিকিৎসা অপ্রতুল। স্ট্রোক হলে ব্রেনে প্রতি মিনিটে ২০ লাখ নিউরন ধ্বংস হয়। তাই প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়ার পরের চার ঘণ্টা গোল্ডেন আওয়ার। এ সময় রোগীকে হাসপাতালে আনলে ওষুধের মাধ্যমে কিংবা অপারেশন করে সুস্থ করতে পারেন চিকিৎসকরা। কিন্তু দেরি হলে পঙ্গুত্ব ও জীবনহানির ঝুঁকি বেড়ে যায়। বাংলাদেশে বর্তমানে শতকরা ৫৩ ভাগ মৃত্যু হয় অসংক্রামক রোগের কারণে। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে হৃদরোগ। মানুষ কায়িক পরিশ্রম একদম কমিয়ে দিয়েছে। আগে মানুষ মাঠে খেলাধুলা করত কিন্তু এখন মেদ, স্থূলতা নিয়ে ভুগছে। উৎসব, আনন্দে ঘরের তৈরি খাবারের চেয়ে অনলাইনে জাঙ্কফুড অর্ডার করছে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস আক্রান্ত ও ধূমপায়ীরাও হৃদরোগের ঝুঁকিতে আছে। পারিবারিক রোগের ইতিহাস থাকলে বংশগত কারণে অনেকে আক্রান্ত হয়। সচেতন হলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটা কমানো যাবে। দেশে স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্তের হার বাড়ার পাশাপাশি চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধাও সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সম্প্রসারিত হয়েছে। তার পরও চিকিৎসা খরচ স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে থাকায় মৃত্যুর হার বাড়ছে। এ সমস্যার সমাধানে দেশের স্বাস্থ্য খাতকে সাজাতে হবে নতুনভাবে। সরকারি হাসপাতালগুলোয় স্ট্রোক ও হৃদরোগের চিকিৎসার সুযোগ বাড়াতে হবে।