বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভয়াবহ যানজট

ত্রিশঙ্কু অবস্থায় নগরবাসী

টানা তিন দিন ছুটির পর সোমবার প্রথম কার্যদিবসেই ভয়াবহ যানজটে অচল ছিল রাজধানী। মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল সে অচলাবস্থা। বিশ্বের আর কোথাও ঢাকার মতো বিরক্তিকর যানজটের আবির্ভাব হয় কি না আমাদের জানা নেই। যানজট রাজধানীর নগর জীবনকেই শুধু বিপর্যস্ত করে তুলছে না, বসবাসের অযোগ্য নগরী হিসেবে ঢাকার স্থায়ী পরিচিতি এনে দিয়েছে। যানজটে এমনই অচলাবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে যে, আধা ঘণ্টা দূরত্বের সড়ক অতিক্রম করতে গড়ে সাত-আটগুণ পর্যন্ত সময় লাগছে। রাজধানীর যানজটের জন্য প্রাইভেট কারের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়। বলা হয়, রিকশার পাশাপাশি প্রাইভেট কারের আধিক্য অচলাবস্থার সৃষ্টি করছে। তবে অভিজ্ঞজনদের বিবেচনায় ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা যানজটের জন্য প্রধানত দায়ী। ঢাকার রাজপথের এক বড় অংশ অবৈধ দখলদারদের দখলে। তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক টাউট, পাড়া-মহল্লার মাস্তান এবং পুলিশের সম্পর্ক থাকায় রাজধানীর সড়কগুলো দখলমুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীর সড়ক ও ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকানপাট উঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হলে যানজট এমনিতেই সহনীয় হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি কঠোরভাবে ট্রাফিক আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হলে যানজটের রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে। যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং যানজটের অন্যতম কারণ। যেখানে-সেখানে গাড়ি ঘোরানো এবং রাজপথে মিছিল-মিটিংয়ের প্রবণতাও যানজটে উৎসাহ জোগায়। এ সমস্যার গ্রন্থিমোচনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীর যেখানে-সেখানে গড়ে ওঠা বিপণি কেন্দ্রগুলোও এ সমস্যার জন্য অনেকাংশে দায়ী।  যানজটের কাছে রাজধানীর প্রায় ২ কোটি মানুষ জিম্মি হয়ে থাকবে তা কোনো অবস্থায় কাম্য হতে পারে না। রাজধানীকে বসবাসের অযোগ্য অচল নগরী হিসেবে দেখতে না চাইলে যেসব কারণে যানজটের উদ্ভব ঘটছে সেগুলো নিরসনে সচেষ্ট হতে হবে। বিশেষ করে রোজার মাসে যানজট নামের আপদ যাতে মাত্রাতিরিক্ত থাবা বিস্তার করতে না পারে সে ব্যাপারে থাকতে হবে সতর্ক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর