বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ

বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্ক

অর্থনৈতিক অবস্থানের দিক থেকে এশিয়ার দুটি দেশ জাপান ও বাংলাদেশের ব্যবধান ব্যাপক। এ ব্যবধান বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়নি। দুই দেশের সরকার ও জনগণের বিদ্যমান সুসম্পর্ক সুদৃঢ়করণ ও সহযোগিতা সম্প্রসারণের ঐকান্তিক ইচ্ছায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে সরকারি সফরে জাপানে অবস্থান করছেন।  অর্থনৈতিক সহযোগিতা, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্বার্থ এবং হাল আমলে ভূরাজনীতির প্রভাবক ভূমিকায় অবতীর্ণ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আধুনিক পর্যায়ে প্রাধান্য পেলেও বর্তমান সম্পর্কের ভিত্তি সুদীর্ঘ সময়ের গভীরে প্রোথিত। ওইসিডি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শিল্পোন্নত জাপানই সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এশিয়ার সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশ জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়ের প্রেক্ষাপটে মিত্র শক্তির নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্র“য়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার সময়ও জাপান ছিল মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রভাব বলয়েরই একটি দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরক্ষা চুক্তির বদৌলতে জাপান ওকিনাওয়া দ্বীপের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় সে বছর। ১৯৭২ সালেই জাপানের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের বিরোধ প্রশমিত হয়ে সিনো জাপান কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপরীত অবস্থান গ্রহণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায় চীনও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে পাকিস্তানের মিত্র দেশ হিসেবে ভূমিকা রাখে। ঠিক এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাপানের সরকার ও জনগণের সমর্থন এবং বিজয়ের অব্যবহিত পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানের সিদ্ধান্ত নিয়ে জাপান নিঃসন্দেহে তাৎপর্যবাহী ও সুদূরপ্রসারী কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেয়। একই কারণে ভারত-বাংলাদেশ-চীনের মধ্যে বিদ্যমান মনস্তাত্ত্বিক ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় জাপানের প্রবেশের আগ্রহকে কৌশলগত কারণে বরণ করার তাৎপর্যবাহী উদ্যোগ বাংলাদেশের। সে নিরিখেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ জাপানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি বড় অনুষঙ্গ হলো বিগত ৫২ বছরে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের প্রসারতা। এ কথা প্রণিধানযোগ্য যে, আধুনিক পর্যায়ে দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা এবং গতি-প্রকৃতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের উত্থান-পতন বিশেষ নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরে জাপান সরকার বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনে এগিয়ে আসে। বাংলাদেশে জাপানি বাণিজ্য ও সেই সুবাদে বিনিয়োগে জাপানিরা বরাবরই আগ্রহ দেখিয়ে এসেছে। জাপান বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সাহায্যদাতা তথা উন্নয়ন সহযোগী দেশ। জাপানই হচ্ছে এশিয়ায় বাংলাদেশের ভারতের পর রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম গন্তব্যস্থল। আবার জাপানি পণ্য চীনের পর বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যের সিংহভাগ দখল করে আছে।

বাংলাদেশ সরকারপ্রধানের এবারের সফরকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো জাপানি অর্থনীতির পুনরুত্থান প্রয়াস প্রচেষ্টার অধ্যয়ন এ মুহূর্তের মধ্যম আয়ের দেশের পথে হাঁটা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ উপযোগী বিবেচিত হতে পারে। জাপান বর্তমান বিশ্ববাজারে একটি অন্যতম অর্থনৈতিক পরাশক্তি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পরে জাপানের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল অত্যন্ত শোচনীয়, বিধ্বস্ত এবং দুর্বল, যা বর্তমান সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার তুলনায় সম্পূর্ণ বিপরীত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলায় জাপানি অর্থনীতি মূলত পঙ্গু হয়ে পড়ে। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে দারুণ খাদ্যাভাবে, অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতিতে এবং ব্যাপক চোরাকারবারি ব্যবসায় অর্থনীতি দারুণ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। জাপানিরা বহির্বিশ্বে তাদের সব দখলীয় এলাকা থেকে বিতাড়িত হয়। ফলে ৮ কোটি জনসংখ্যার সঙ্গে সহসা ৬০ লাখ বিদেশফেরত জাপানি যুক্ত হয়। বোমা হামলায় কলকারখানাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সামরিক ক্রয় ও কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাজার হঠাৎ করে সীমিত হয়ে পড়ে। মার্কিন জেনারেল ডগলাস ম্যাকার্থার (১৮৮০-১৯৬৪) এর নেতৃত্বে মিত্রবাহিনীর দখলদার প্রশাসন জাপানের বহির্বাণিজ্যের ওপর বিশেষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। ফলে বিদেশের বাজারে জাপানি সামগ্রীর চাহিদা পড়ে যায়, কাঁচামাল আমদানি বাধাগ্রস্ত হওয়ায় উৎপাদন ও সরবরাহ সক্ষমতা হ্রাস পায় এবং এর ফলে বিতরণ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশাল কর্মজীবী বেকার হয়ে পড়ে।

আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান, কঠোর পরিশ্রমী ও আত্মমর্যাদা সম্পর্কে সচেতন জাপানি জনগণ শত প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে সাফল্যের সন্ধান পায়। ১৯৫১ সালের মধ্যে জাপানের জিএনপি ১৯৩৪-৩৬ সালের পর্যায়ে পৌঁছে এবং ১৯৫৪ সালে রিয়াল টার্মে মাথাপিছু আয় ১৯৩৪-৩৬ সালের পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। পরিত্যক্ত সামরিক বাহিনীর লোকবল এবং বিদেশফেরত বেসামরিক জনবল একত্রে জাপানের বিশাল কর্মীবাহিনীতে রূপান্তরিত হয়। বিশাল সামরিক ব্যয় ও যুদ্ধে যুবকদের বাধ্যতামূলক ব্যবহার বন্ধ হওয়ায় শিল্প-কলকারখানার জন্য বাড়তি বরাদ্দ এবং  প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল লোকবল পাওয়া নিশ্চিত হয়। ম্যাকার্থার প্রশাসন কর্তৃক বেশ কিছু সংস্কারমূলক কর্মসূচি গ্রহণের ফলে আর্থ প্রশাসনিক কর্মকান্ডে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। একচেটিয়া ব্যবসায় নিয়োজিত বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে দেওয়ায় তাদের দখলে থাকা বিশাল ভূসম্পত্তি জনসাধারণ, বিশেষ করে চাষিদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া সম্ভব হয়। শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকান্ডে বিব্রতকর বাধাগুলো অপসারণ করা হয় এবং সবার চাকরির শর্তাবলি পুনর্নির্র্ধারিত হয়, এর ফলে কর্ম পরিবেশে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।

উৎপাদনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় অর্থনীতির মুখ্য দুই খাত হিসেবে কয়লা ও ইস্পাত শিল্পকে নির্বাচন করায় এ দুই খাতে উল্লেখযোগ্য উৎপাদন নিশ্চিত হয় যা পশ্চাদশিল্পসংযোগ হিসেবে অন্যান্য অধিকাংশ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হয়। নতুন শাসনতন্ত্রে ‘যুদ্ধ নাস্তি’ ধারা (অনুচ্ছেদ ৯) সংযুক্ত হওয়ায় সামরিক ব্যয় সম্পূর্ণ লোপ পায়। এর ফলে অর্থনৈতিক সমৃৃদ্ধি অর্জনের জন্য সামরিক বাহিনী বাবদ ব্যয় সাশ্রয় শুধু নয়, জাতীয় চিন্তা-চেতনার ক্ষেত্রেও একটা পরিশীলিত প্রত্যয় ও মেজাজ ফিরে আসে। যুদ্ধে ত্যক্ত-বিরক্ত ও সর্বস্বান্ত জাপানি জনগণ জেনারেল ম্যাকার্থারের শাসনতান্ত্রিক সংস্কারকে স্বাগত জানায় এবং যুদ্ধে উন্মত্ত জাপানি জাতিকে বাধ্যতামূলকভাবে শিল্প কারখানা ও কৃষিতে ফিরিয়ে দেওয়ায় তাদের আর্থসামাজিক জীবনব্যবস্থায় তাৎপর্যবাহী অগ্রগতি সাধিত হয়। দীর্ঘমেয়াদে দেখা যায়, যুদ্ধে পরাজয়বরণে ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনীর দখলদারিত্বে এবং বিশেষ করে জেনারেল ম্যাকার্থারের প্রশাসনাধীনে অর্থনৈতিক ভিত পুনর্নির্মাণের সুযোগ লাভের ফলে বিশ শতকের শেষার্ধে জাপান অর্থনৈতিক পরাশক্তির পর্যায়ে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।

অতি সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদ, মোট ভূখন্ডের মাত্র ৩০ ভাগ বাস ও চাষযোগ্য জমি এবং ভূমিকম্পপ্রবণ দ্বীপপুঞ্জের দেশ জাপানের অর্থনীতির ভিত মূলত শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর একান্তভাবে নির্ভরশীল। প্রক্রিয়াজাত শিল্পসামগ্রী রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনই জাপানি অর্থনীতির অন্যতম অবলম্বন। বিদেশি প্রযুক্তি প্রয়োগ এবং প্রক্রিয়াজাত শিল্প উৎপাদনের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল অপরিসীম। আর এ উদ্দেশ্য অর্জনে কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োগ প্রক্রিয়ায় জাপানের বড় বড় ট্রেডিং হাউসগুলোর ভূমিকাও ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতিকে পুনর্গঠন ও পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে জাপান সবকিছুর ওপর শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগে মনোনিবেশের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নের নীতি গ্রহণ করে। ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ যুদ্ধ শেষ হওয়ার দুই বছরের মধ্যে বৈদেশিক বাণিজ্য বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার লক্ষ্যে পদ্ধতি সংস্কারসহ নিয়ন্ত্রণমূলক নীতিমালায় আনা হয় ব্যাপক পরিবর্তন। এর দুই বছর পর ১৯৪৯ সালে মুদ্রা বিনিময় হার ডলারপ্রতি ৩৬০ ইয়েনে বেঁধে দেওয়া হয়। জাপান সরকার এ সময় বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে কয়েকটি পোষক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর মধ্যে                    উল্লেখযোগ্য হলো, ১৯৪৭ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠিত মিনিস্ট্রি অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (মিটি), ১৯৫০ সালে এক্সপোর্ট ব্যাংক অব জাপান (যা সত্তরের দশকে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট (এক্সিম) ব্যাংক এবং হালে জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) হিসেবে ওভারসিজ ইকোনমিক কো-অপারেশন ফান্ড (ওইসিএফ)-এর সঙ্গে একীভূত হয়) এবং ১৯৫৮ সালে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো)। মিটি আন্তর্জাতিক বাজারে জাপানের প্রবেশ নিশ্চিত করতে নীতি ও পদ্ধতি নিয়ে নিরন্তর গবেষণা এবং বহির্বাণিজ্য বৃদ্ধির কর্মপন্থা নির্ধারণে ও নিয়ন্ত্রণে, এক্সিম ব্যাংক আমদানি-রপ্তানিকারকদের পুঁজি সরবরাহসহ যাবতীয় আর্থিক লেনদেনে নিশ্চয়তা বিধান করে এবং জেট্রো জাপানি পণ্যের বিদেশে বাজার সৃষ্টিতে এবং একই সঙ্গে বিদেশি পণ্যের (কাঁচামাল) জাপানে আমদানি বিষয়ে গবেষণা, প্রতিবেদন প্রকাশসহ উৎসাহ, অনুপ্রেরণা ও প্রণোদনার দায়িত্ব পালন করতে থাকে। বিদেশে জাপানি পণ্যের বাজার প্রসারে এবং সরকারের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি নীতি, রীতি পদ্ধতি সংস্কার সংক্রান্ত সংলাপে ও সুবিধাবলি আদায়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের নিমিত্তে পণ্য ও শিল্প খাতওয়ারী আমদানি-রপ্তানি সমিতিগুলো গড়ে ওঠে এ সময়ে। সমিতিগুলো বাজার গবেষণা, তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ এবং নিজেদের উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান উন্নয়নে মনোনিবেশ করে এবং বাজার অনুসন্ধান ও উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক তথ্য-উপাত্ত ও সংবাদবাহী দৈনিক পত্রিকা এবং বিশেষায়িত সাময়িকীগুলোর প্রকাশনাও শুরু হয় এ সময়ে।

জাপান সরকার ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষেত্রে বেশ কিছু পদ্ধতি প্রবর্তন করেন, যার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল রপ্তানি উৎসাহিতকরণ। এদের মধ্যে ‘রপ্তানি আয় থেকে করযোগ্য আয় বাদ দেওয়ার পদ্ধতি’, ‘রপ্তানি অর্থায়নের ব্যবস্থা সহজীকরণ’ ‘রপ্তানি বীমা পদ্ধতি’ প্রবর্তন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ব্যবসা ও বণিক সমিতিগুলোর মতামত, পরামর্শ ও প্রস্তাবকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থার প্রধান, শিল্প গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ প্রতি মাসে নিজ নিজ নির্ধারিত তারিখে পৃথকভাবে সংবাদমাধ্যমগুলোর সঙ্গে দেশের অর্থনীতি, শিল্প উৎপাদন পরিস্থিতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ নীতি নিয়মাবলি ব্যাখ্যা এবং সেসবের প্রয়োগ সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা ও মতবিনিময় করতেন, এ পদ্ধতি ও কর্মসূচি এখনো বলবৎ আছে।

পঞ্চাশ দশকের শেষ ভাগ এবং ষাট দশকের প্রথম ভাগে জাপানি অর্থনীতিতে এক অভূতপূর্ব সাফল্য ও স্থিতিশীলতা আসে এবং এ সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহতভাবে কমবেশি গড়ে ১০ এর ওপরে থাকে।  এ সময়ে জাপানের রপ্তানি প্রবৃদ্ধির হার বিশ্ব বাণিজ্যে রপ্তানির বৃদ্ধির গড় মাত্রা অতিক্রম করে।

 

লেখক : সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান।

জাপানে বাংলাদেশ দূতাবাসে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন ( ১৯৯৪-২০০০)

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর