বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে নতুন ইতিহাস গড়েছে বসুন্ধরা কিংস। টানা চারবার লিগ শিরোপা অর্জনের কৃতিত্ব দেখিয়েছে তারা। এ কৃতিত্ব অর্জিত হয়েছে তিন ম্যাচ হাতে রেখেই। জুলিয়াস সিজারের ভেনি ভিডি ভিসি অর্থাৎ এলাম দেখলাম জয় করলাম উক্তির উদাহরণ যেন এ দলটি। বসুন্ধরা কিংস ২০১৭-১৮ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন লিগের শিরোপা নিয়ে পেশাদার লিগে ঠাঁই পায় এবং অভিষেকেই শিরস্ত্রাণে যুক্ত করে সর্বোচ্চ সাফল্যের পালক। তার পর থেকে প্রতিটি পেশাদার লিগ হয়ে উঠেছে বসুন্ধরা কিংসময়। শিরোপা অর্জন তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ঢাকার ফুটবল লিগ
শুরু হয় ১৯৪৮ সালে। সে বছর সব কটি দলই ছিল নতুন, স্বভাবতই সেসব দলের মধ্যে ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং শিরোপা পায়। তারপর আর কোনো দল ৭৫ বছরে অভিষেক মৌসুমে শিরোপা পায়নি। পরপর চারবার শিরোপা অর্জন তো দূরের কথা। শুক্রবার কিংস অ্যারিনায় আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল উৎসবের মঞ্চ। স্টেডিয়াম সেজেছিল লাল রঙে। দূর থেকে মনে হয়েছে কৃষ্ণচূড়ায় ছেয়ে গেছে গোটা স্টেডিয়াম। উপলক্ষ বসুন্ধরা কিংসের টানা চতুর্থ শিরোপা উৎসব উদযাপন। আগের ম্যাচেই কিংসের কাউন্টডাউন শুরু হলেও শুক্রবার সেই কাক্সিক্ষত মুহূর্তটি ধরা দেয়। রেফারির শেষবাঁশি বাজতেই ঢোলের তালে তালে কিংস অ্যারিনার গ্যালারি আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠে। ফুটবলাররা সে সময় ধীরস্থিরভাবে প্রতিপক্ষ ফুটবলারের সঙ্গে হাত মেলান। এরপর মাঠে বসে হাত উঁচিয়ে পরম করুণাময়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। গ্যালারি থেকে কিংসের লাল পতাকা হাতে দর্শক মাঠে ঢুকতেই ফ্লাডলাইটের আলোয় স্টেডিয়ামের সবুজ প্রাঙ্গণ উৎসবের মেলায় রূপ নেয়। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ডরিয়েলটন গোমেজের চোখধাঁধানো পারফরম্যান্সে ৬-৪ গোলে জিতে ইতিহাস লিখতে সক্ষম হয়েছে বসুন্ধরা কিংস। ইতিহাস গড়া ম্যাচে একাই ৪ গোল করেছেন ডরিয়েলটন। বাংলাদেশ পেশাদার লিগের চলতি মৌসুমে এই প্রথম কিংসের কোনো ফুটবলারের হ্যাটট্রিক। ১৮ গোল করে সবার ওপরে ডরিয়েলটন। বাকি তিনটি খেলায় তিনি যে আরও ঝলসে উঠবেন তা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশের ফুটবল যখন হারিয়ে যেতে বসেছিল, তখন বসুন্ধরা কিংসের আবির্ভাব। তাদের টানা চারবার শিরোপা অর্জন দলবিশেষ নয়, বাংলাদেশের ফুটবলের বড় অর্জন বললেও অত্যুক্তি হবে না। অবিস্মরণীয় ইতিহাস রচনার জন্য বসুন্ধরা কিংসকে অভিনন্দন।