বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সোফিয়া লরেন থেকে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

সোফিয়া লরেন থেকে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

সোফিয়া লরেন

রূপে ও অভিনয়ে তাঁদের খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। এক নামেই তাঁদের বিশ্বের মানুষ চেনে। ইতালীয় দেবী সোফিয়া লরেনের সময় থেকে রহস্যময় সৌন্দর্যের আঁধার অ্যাঞ্জেলিনা জোলি- এঁদের সবার জাদুতে এখনো বুঁদ বিশ্ব। লিখেছেন- পান্থ আফজাল

 

সোফিয়া লরেন

বাবা তাঁকে সন্তানের স্বীকৃতি দেননি। বিশেষ হাসপাতালে তাঁর জন্ম। মা রোমিলদা হয়তো তাঁকে হাসপাতালে রেখেই পালাতেন, কিন্তু তাঁর মনে ক্ষীণ আশা ছিল মেয়ের বাবা ফিরে আসবেন এবং তাঁকে বিয়ে করবেন। রিকার্দো অবশ্য হাসপাতালে এসে মেয়েকে দেখেছিলেন এবং পিতৃত্ব স্বীকারের কাগজে সইও করেছিলেন। তারপর নিজের মায়ের নামে মেয়ের নাম সোফিয়া রেখে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে ফিরে গেলেন। এই জন্ম বৃত্তান্তই বলে দেয়, সোফিয়া লরেন হওয়াটা একেবারেই সহজ ছিল না। বরং এর জন্য তাঁকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক চড়াই-উতরাই। বিশ্বযুদ্ধ-উত্তর ইতালিতে কঠিন দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু বাবার পরিচয় ছাড়া বড় হয়ে সোফিয়া লরেন পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হয়েছেন। ‘তোমার কথা বলা যেন মধুবালা, হাঁটাচলা সোফিয়া লরেন’- নিজের কল্পিত প্রেমিকাকে নন্দিত গায়ক অঞ্জন দত্ত এভাবেই গানে গানে খুঁজে নিয়েছিলেন। এভাবে আরও অনেক কোটি পুরুষ নিজের প্রেমিকাকে দেখতে চেয়েছেন বিশ্ব চলচ্চিত্রে ইতালীয়ান দেবী বলে খ্যাত সোফিয়া লরেনের সৌন্দর্যে, ব্যক্তিত্বে। মা-বাবার পথ অনুসরণ করে অ্যাডওয়ার্ড পন্টিও চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়েছেন। ছবি প্রযোজনা ও পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্যকার এবং অভিনেতা হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তাঁর। ‘অরোরা’, ‘বিটুইন স্ট্রেঞ্জারস’সহ আরও বেশ কয়েকটি প্রশংসিত সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি। ক্যারিয়ারে একবার অস্কার, বেশ কয়েকবার গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডসহ বহু পুরস্কার ও স্বীকৃতিতে সম্মানিত হয়েছেন সোফিয়া লরেন।

 

অড্রে হেপবার্ন

অড্রে হেপবার্ন

চির সৌন্দর্যের দেবী অড্রে হেপবান। অড্রে ক্যাথলিন রাস্টন হেপবার্নের জন্ম বেলজিয়ামের ব্রাসেলসের উপকণ্ঠে, ১৯২৯ সালের ৪ মে। পরিবারে সবাই তাঁকে ডাকত আদ্রিয়ান্তজ্যাঁ নামে। হেপবার্নের মা জমিদার পরিবারের মেয়ে আর বাবা ব্রিটিশ ব্যাংকার। অড্রে ২০ বছর পর, ১৯৬৭ সালে ইয়াংয়েরই পরিচালিত ওয়েট আনটিল ডার্ক ছবিতে অভিনয় করেন। একদম ছোটবেলা থেকেই অড্রে চেয়েছিলেন ব্যালে নৃত্যশিল্পী হতে। পোল্যান্ডের বিখ্যাত শিল্পী মারি র‌্যাম্বার্টের কাছে লন্ডনে ব্যালে শিখেছিলেনও। ব্যালে নাচের জন্য তখন সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। কিন্তু তাঁর উচ্চতা ছিল ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি। উচ্চতা তাঁর স্বপ্নের পথে বাদ সেধে বসল। আর বিশ্বযুদ্ধের সময় তৈরি হওয়া অপুষ্টি আর অসুস্থতার জন্য তিনি শেষমেশ ব্যালে থেকে অভিনয়ের দিকে চলে আসেন। তিনি প্রথমে লন্ডনের থিয়েটারে অভিনয় শুরু করলেন। এরপর ১৯৫৩ সালে রোমান হলিডে ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তাক লাগিয়ে দেন। অড্রে ১৯৫৪ সালে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার, বাফটা এবং ড্রামায় গোল্ডেন গ্লোব পান। ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হয়ে অড্রে ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন।

 

এলিজাবেথ টেইলর

এলিজাবেথ টেইলর

অভিনেত্রী ডম এলিজাবেথ রোজমন্ড টেইলর ডিবিই বা লিজ টেইলর। ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ব্রিটিশ-মার্কিন অভিনেত্রী। তিনি তাঁর অভিনয় প্রতিভা ও সৌন্দর্যের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য; একাধিক বিয়ে করা নিয়েও আলোচিত। টেইলরকে হলিউডের স্বর্ণযুগের অন্যতম অভিনত্রী হিসেবে ধরা হয়। তাঁকে তাই বলা হয় জীবনের থেকেও বড় তারকা। আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট টেইলরকে তাঁদের নারী কিংবদন্তি তালিকায় সপ্তম স্থানে রেখেছে।

 

মেরিলিন মনরো

মেরিলিন মনরো

নর্মা জিন মর্টেনসন। পরবর্তীতে মেরিলিন মনরো নামেই ঝড় তুলেছিলেন মার্কিন এই মডেল, অভিনেত্রী। সম্ভবত আজও পৃথিবীর সব  থেকে গ্ল্যামারাস নারী তিনিই। বেঁচে থাকলে বয়স হতো ৯৫ বছর। তবে তাঁর চলে যাওয়ার এত বছর পরও তো থামেনি মেরিলিন মনরো আখ্যান। আজও আমেরিকার পাম স্প্রিংস আর্ট মিউজিয়ামের সামনে তাঁর উড়ন্ত স্কার্টের ২৬ ফুট উঁচু মূর্তি নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধে। লস অ্যাঞ্জেলেসে তাঁর জন্ম মানসিক ভারসাম্যহীন এক মায়ের কোলে। আমৃত্যু জানতে পারেননি পিতৃপরিচয়। রুপালি জগতের আলো, তাঁর প্রতি পুরুষের গভীর আকর্ষণ- এসব ছাড়িয়েও তিনি হয়েছেন হলিউডের এক সফল অভিনেত্রী, গায়িকা, মডেল। কেরিয়ারে মোট ৩৪টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। একাধিক বিয়ে, প্রেম, সম্পর্কের গুঞ্জন- ব্যক্তিগত জীবনেও কম বিতর্ক ছিল না গ্ল্যামার কুইনের।

 

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

মার্কিন অভিনেত্রী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও মানবহিতৈষী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তিনি তিনবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, দুইবার স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার এবং একবার একাডেমি পুরস্কার লাভ করেছেন। ২০০১ সালে তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার শুভেচ্ছাদূত মনোনীত হন। বিশ্বব্যাপী মানবতার প্রচার এবং বিশেষ করে শরণার্থীদের নিয়ে কাজ করার জন্য জোলি বিশেষভাবে সমাদৃত। একাধিকবার তিনি ‘বিশ্বের সেরা সুন্দরী’ নির্বাচিত হয়েছেন। রুপালি পর্দার অন্তরালে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তিনি বেশ আলোচিত। এ অভিনেত্রী রোহিঙ্গাদের দেখতে বাংলাদেশেও এসেছিলেন।

সর্বশেষ খবর