শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : আরিফিন শুভ

সিনেমাটির জন্য সর্বোচ্চ শ্রম দিয়েছি

সিনেমাটির জন্য সর্বোচ্চ শ্রম দিয়েছি

ঢাকাই সিনেমার একমাত্র সিক্সপ্যাক হিরো আরিফিন শুভ। নতুন বছর শুভময় হতে যাচ্ছে। কারণ তার একটার পর একটা সিনেমা রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। আজ সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে এই সুদর্শন নায়কের ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমা।  এই সিনেমা ও সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। লিখেছেন- পান্থ আফজাল

 

নতুন বছর হতে চলেছে শুভময় আপনার কী মত?

এটা ভক্তদের ভালোবাসা। আজ সারা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে আমার অভিনীত সিনেমা ‘ব্ল্যাক ওয়ার’। অন্যদিকে বেশকিছু কাজ করেছি, যা এ বছরে মুক্তির অপেক্ষায়। তার মধ্যে রয়েছে ‘মুজিব’, ‘নূর’, ‘উনিশ ২০’ ‘ফুটবল ৭১’। আমি সব সময় মনে করি নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে সঠিক পথে চললে সামনের দিনগুলো সুন্দর হবেই। এ বছর সেই চেষ্টাই থাকবে। আমাদের চলচ্চিত্র যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, যদি সবাই এক হয়ে কাজ করি তাহলে এ বছর সেই ধারাবাহিকতা আমরা রক্ষা করতে পারব।

 

ব্ল্যাক ওয়ার দিয়ে খুলছে মধুমিতা হল...

শুধু আমার জন্য নয়, সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির সবার জন্য এটা খুবই আনন্দের খবর। আমি ¯পষ্ট করে বলছি, যারা আমার ওপর আস্থা রেখে সিনেমাটি দেখতে হলে আসবেন, আমি আমার জায়গায় শতভাগ কাজ করেছি কি না সেটা আপনারা বিচার করবেন। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি প্রায়ই বলতেন আমরা অস্ত্র ট্রেনিং ছাড়াই যুদ্ধে জিতেছি। তেমনি আমাদের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কিছুই নেই। অদম্য ইচ্ছাশক্তি দিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

 

এই সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

একটি সিনেমার জন্য কতটা শ্রম-ঘাম ঝরানো সম্ভব, তার উদাহরণ হতে পারে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’। ভাবতে পারেন, নিজের সিনেমা বলেই হয়তো বাড়িয়ে বলছি। কিন্তু মোটেও তা নয়। হলে গিয়ে সিনেমা দেখুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, একটুও বাড়িয়ে বলিনি। সত্যি এটাই, এখন পর্যন্ত যত সিনেমায় অভিনয় করেছি, তার মধ্যে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’র জন্যই আমাকে সর্বোচ্চ শারীরিক ও মানসিক শ্রম দিতে হয়েছে। তা করতে গিয়েই পড়েছি পায়ের ইনজুরিতে। সেই কষ্ট এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। যতদিন বাঁচব ততদিন হয়তো বয়ে বেড়াতে হবে। আমি একটা বিষয় সবার জন্য বলব যে, আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। তাই আমাদের ছবির সঙ্গে কেজিএফ বা পুষ্পার তুলনা করবেন না। ব্যক্তিগত স্বার্থে বাজার কাটতির জন্য আমাদের এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে ইন্ডাস্ট্রি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে নিতে হলে আমাদের শাকিব খান, শরীফুল রাজ, সিয়াম, শুভ সবাইকে লাগবে।

 

চরিত্রকে দর্শকের বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য সিক্সপ্যাকও বানিয়েছেন...

সিনেমাটির জন্য আমি শারীরিক ও মানসিক যে শ্রম দিয়েছি, সেটা আমার দৃষ্টিতে সর্বোচ্চ। শুধু যে কায়িক পরিশ্রম করেছি তা নয়; গল্পের সঙ্গে নিজেকে পুরোপুরি মিশিয়ে দিয়ে চরিত্রকে দর্শকের বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার চেষ্টাও করেছি। এই সিনেমার জন্য পায়ের ইনজুরি হয়েছে, যা আমি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি। যতদিন বাঁচব ততদিন হয়তো সেটা বইতে হবে। আমি দর্শকদের বলব, এতদিন বাইরের দেশের ছবির জন্য এমন পরিশ্রম দেখেছেন এবার মেইড ইন বাংলাদেশের পরিশ্রমটা দেখুন। এ দেশের সিনেমা যে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছেছে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ দেখার পর অনেকেই তা স্বীকার করবেন। আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু চেষ্টা আর পরিশ্রম করতে তো টাকা লাগে না। তাই এটা করতে পেরেছি।

 

অনেক অভিনয় তারকাকে দেখা যায় সিনেমার কাজ শেষ করে প্রমোশনে আর সময় দেন না আপনি বিষয়ে কী বলবেন?

আমি মনে করি, সিনেমায় শুটিং থেকে শুরু করে মুক্তির পরও সময় দেওয়া উচিত। যে মানুষটি কষ্টে উপার্জিত টাকা থেকে খরচ করে সিনেমা দেখছে, সেই টাকায় আমার মতো অনেকের পরিবার চলছে। সেখান থেকে প্রযোজকরা টাকা পাচ্ছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমি এসব দর্শকদের ঠকাতে চাই না। জীবন থেকে গুরুত্বপূর্ণ সময় বের করে টাকা খরচ করে গাড়িতে চড়ে দর্শক সিনেমা দেখতে যান। যদি পারতাম সবার বাড়ি গিয়ে বুকে জড়িয়ে কিছুক্ষণ আপনাদের পাশে বসে থাকতাম।

 

সম্প্রতি মিরপুরে বিপিএলের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন দেশের ক্রিকেট নিয়ে কি সিনেমা হওয়া উচিত?

আমাদের ক্রিকেটাররা যখন দেশের নাম উজ্জ্বল করেন, যখন বিশ্বের সামনে আমাদের দেশের পতাকা ওড়ে তখন এই ভালোলাগা অন্য কিছু দিয়ে পূরণ করা যাবে না। যারা আমাদের ক্রীড়াঙ্গনে অবদান রেখেছেন তাদের ঋণ শোধ করা যাবে না। শুধু এখন নয়, এর আগেও যারা দেশের বাইরে বাংলাদেশের নাম কুড়িয়েছেন তাদের সবাইকে নিয়েই সিনেমা হওয়া উচিত।

 

প্রথমবারের মতো মিউজিক্যাল ফিল্মে কাজ করেছেন কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

অনেক দিন পর এই গানের মাধ্যমে দর্শক রোমান্টিক শুভকে দেখছেন। এটি বিয়ের গান হিসেবে নির্মিত হয়েছে, দর্শক নতুনত্ব কিছু পেয়েছেন এই গানে। রেসপন্সও পাচ্ছি বেশ ভালো।

 

ওয়েব ফিল্মে বিন্দুর সঙ্গে জুটি হয়েছেন সব মিলিয়ে কেমন ছিল?

‘উনিশ ২০’ দারুণ একটি প্রেমের গল্প। আমার চরিত্রের নাম অপু। আরিয়ান, বিন্দুসহ আমরা সবাই মিলে ভালো একটা কাজ করেছি। আগে যাদের সঙ্গে নিয়মিত কাজ হতো তাদের আবার দেখে ভালো লাগছে।

 

নতুন বছর নিয়ে ভাবনা-প্রত্যাশা কী?

একেকজন মানুষের জীবন দর্শন একেক রকম হয়। জীবনকে দেখার চোখ, জীবনকে নেওয়ার ভাবনা, ভিন্ন হয়। ওই যে বলে না, নিউইয়ার রেজ্যুলেশন; আমার আসলে এরকম কিছু কোনো দিনই ছিল না।

 

কেন ছিল না?

কারণ আমি গত বছরও ডিসিপ্লিন ছিলাম, আমার পক্ষে সম্ভব যত পরিশ্রম, চেষ্টা অব্যাহত ছিল, তার আগের বছরও ছিল, ১০ বছর আগেও ছিল, এই বছরও আছে, থাকবে। সুতরাং ২০২২, ২৩, ২৫, ৩০ বা ৫০ যতদিন বেঁচে আছি, আমি একটা জিনিসই চাইব, আল্লাহ আমাকে সুস্থ রাখুন। বাকি সবকিছু আমি করে নেব।

সর্বশেষ খবর