হালের অন্যতম বিতর্কিত ও আলোচিত সঙ্গীতশিল্পী আরফিন রুমির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুইপক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৪ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক আরিফুর রহমান এ আদেশ দেন।
আজ সকালে আদালতে উপস্থিত হন রুমি ও অনন্যা। সঙ্গে ছিলেন তাদের মা, ভাই ও আত্মীয়স্বজন। শুনানির আগে অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন রুমি ও তার পরিবার। রুমির পরনে ছিল সাদা শার্ট। তার মা ও ভাই ফাল্গুনদিনের বাসন্তী পোশাক পরিহিত ছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ফ্যাকাসে হয়ে যায় বাসন্তী রং। আদেশ দেওয়া হয় রুমির জামিন নামঞ্জুরের।
আজকের আদেশের পর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে অনন্যা বলেন, আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। যা করছি সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য।
গত সোমবার মধ্যরাতে অনন্যার বাসায় যান রুমির মা। কিছুদিন ধরে জ্বরে ভূগছিল রুমি-অনন্যার সন্তান আরিয়ান। অসুস্থ অবস্থায় বাবার সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছা পোষণ করলে রুমিদের বাসায় যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু রুমি ছেলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় দাদীকে (অনন্যার শাশুড়ি) বিস্তারিত জানানো হয়। অনেকটা অনন্যার মায়ের অনুরোধেই নাতিকে দেখতে আসেন রুমির মা। অনন্যার মাও আরিয়ানের দাদীকে সাদরে গ্রহণ করেন।
এর আগে গত বছরের ১২ অক্টোবর যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন ও মতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিয়ের অভিযোগে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় প্রথম স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় রুমিকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১২ সালের অক্টোবরে নিউইয়র্কপ্রবাসী কামরুন নেসার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দেন রুমি। নিউইয়র্ক থেকে ২৪ অক্টোবর রাতে ঢাকায় আসেন কামরুন নেসা। ওই রাতেই রাজধানীর পুরান ঢাকার গুলবদন দরবার শরিফে দ্বিতীয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন রুমি।
এদিকে, ২৪ ডিসেম্বরের পর এ দম্পতির শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রত্যাশা রেখেছিলেন এবার হয়তো বরফ গলতে শুরু করেছে। কারণ ওই সময় আদালতে দুই পক্ষকেই কিছুটা নরম হতে দেখা গেছে। এরপর অনেকেই তাদেরকে ফোনে বুঝিয়েছেন। কিন্তু যতটুকু প্রত্যাশা নিয়ে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে ঠিক ততটুকু হতাশা নিয়েই ব্যর্থ হতে হয়েছে। একে অন্যের বিপক্ষে কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়িতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন রুমি-অনন্যা। দোষারোপ দিতে থাকে একে অন্যকে।
অন্যদিকে, রুমি-অনন্যার এ দাম্পত্য কলহের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রুমির শুভানুধ্যায়ী ও ভক্তকূল। তাদের প্রত্যাশা এ দম্পতি যেন শীঘ্রই ঝামেলা মিটিয়ে ফেলেন। কারণ তারাও চান না রুমির মতো একজন উদীয়মান শিল্পীকে নিয়ে সঙ্গীত পাড়ায় কোনো রকম তর্ক-বিতর্ক হোক।
উল্লেখ্য, রুমি ও অনন্যার মধ্যে একটি আপোসনামা হয়। এতে লেখা ছিল, সন্তান আরিয়ানের ভরণপোষণের জন্য রুমি অনন্যাকে ২০ লাখ টাকা প্রদান করবে, যা ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখা হবে। এ ছাড়া অনন্যার সঙ্গে সে আর খারাপ ব্যবহার করবে না। অধিকার দিবে স্ত্রীর প্রকৃতি মর্যাদার।