পারিবারিকভাবেই ফিরোজা বেগমের গানের চর্চা হতো। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি গান করতেন। সেই ১০-১১ বছর বয়সে কঠিন কঠিন সব সুরের গান তুলে ফেলতেন। তাই ফিরোজা বেগমকে নিয়ে বিস্ময় ছিল সবার। এই বিস্ময় থেকেই মুগ্ধ হন সুরকার কমল দাশগুপ্তও। সুরের সাধক সুরের বৈচিত্র্যে মুগ্ধ হবেন এটাই তো স্বাভাবিক।
১৯৪১ সালে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েই পরিচয় হয় কমল দাশগুপ্তের সঙ্গে। পরবর্তীতে সম্ভবত ১৯৪৩ সালে কমল দাশগুপ্তের তত্ত্বাবধানে দুটো উর্দু গানের রেকর্ড প্রকাশ হয় ফিরোজা বেগমের। গান দুটি ছিল- 'ম্যায় প্রেম ভরে, প্রীত ভরে শুনাউ' এবং 'প্রীত শিখানো আয়া'।
এ গান দুটি রেকর্ডের সময়ও ফিরোজা বেগমের কণ্ঠের জাদুতে বারবার বিমোহিত হন সুরকার। নিজের মন মতো গাইয়ে নেন ফিরোজা বেগমকে দিয়ে।
এরপর দীর্ঘ সময় চিত্ত রায় ও কমল দাশগুপ্তের কাছে গান শিখেছেন ফিরোজা বেগম। তবে কমল দাশগুপ্তের কাছ থেকে অনেক ধরনের গান শিখেছেন। তাকেই বলা যায় ফিরোজা বেগমের গানের গুরু। কিন্তু গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক একসময় নতুন দিকে মোড় নেয়। ভালোবাসার হাতছানি দুজনের চোখে-মনে।
১৯৫৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টানা ১৩ বছর কলকাতায় ছিলেন ফিরোজা বেগম। এ সময়ের মধ্যে দুজনের সম্পর্ক আরও গভীর হয়। আর তাই ১৯৫৬ সালে তারা বিয়ের বন্ধনে জড়ান। তাদের এ বিয়ে প্রথমে মেনে নেয়নি ফিরোজা বেগমের পরিবার। দুজনের ধর্ম নিয়েও ছিল স্বজনদের দ্বন্দ্ব। কিন্তু সম্পর্কেও স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় সব দ্বন্দ্ব। তাই তো কমল দাশগুপ্ত এবং ফিরোজা বেগমের ঘর আলো করে আসে তিন পুত্রসন্তান।