ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অনুষ্ঠান ধারণ এখন 'ইত্যাদি' টিমের নিয়মিত কাজ। তারা তুলে আনছে ঐতিহ্য। সেই ধারাবাহিকতায় 'ইত্যাদি' এবার ধারণ করা হয়েছে নাটোরের উত্তরা গণভবনে। আগে এটি দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্ণিল আলোয় সাজানো এই রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে 'ইত্যাদি'র শুটিং হয়। এ সময়ে রাজবাড়ির সামনের মাঠে, আশেপাশের গাছসহ বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে দর্শক মুগ্ধ হয়ে শুটিং উপভোগ করেন।
শেকড় সন্ধানী ইত্যাদিতে সবসময়ই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রচারবিমুখ, জনকল্যাণে নিয়োজিত মানুষদের খুঁজে এনে তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়। যাতে তাদের এসব কাজ দেখে অন্যেরাও অনুপ্রাণিত হতে পারেন। এবারের পর্বেও রয়েছে তেমনি কয়েকটি হৃদয়ছোঁয়া প্রতিবেদন। একজন হতদরিদ্র শিক্ষক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের দেলোয়ার হোসেনের জীবন সংগ্রামের ওপর একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। রয়েছে কোরিয়া প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক মাহবুব আলমের ওপর একটি বিশেষ প্রতিবেদন। যিনি নিজের নিষ্ঠা, চেষ্টা ও অধ্যবসায়ের ফলে খ্যাতিমান হয়েছেন কোরিয়ায়। এ ছাড়াও মাগুরার বালিদিয়া গ্রামের জন্মান্ধ আবুল বাশারের উপর রয়েছে একটি মানবিক প্রতিবেদন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতোই যিনি দৈনন্দিন কাজগুলো করে থাকেন খুব সহজেই। নিজেকে যিনি কখনোই প্রতিবন্ধী মনে করেন না।
এবারের ইত্যাদিতে মূল গান রয়েছে একটি। গান গেয়েছেন নাটোরেরই খ্যাতিমান শিল্পী ফরিদা পারভীন।
দর্শক পর্বের নিয়ম অনুযায়ী যেই স্থানে ইত্যাদি ধারণ করা হয় সেই স্থানকে ঘিরে দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয় এবং সঠিক উত্তরদাতাদের দিয়ে করা হয় ২য় পর্ব। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নাটোর ও দিঘাপতিয়া রাজবাড়িকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝখান থেকে ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে নাটোরকে ঘিরেই একটি নাট্যাংশে তারা অভিনয় করেন। নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও রয়েছে যথারীতি মামা-ভাগ্নে, নানী-নাতি ও চিঠিপত্র বিভাগ। মঞ্চে নাটোর জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী নিয়ে করা হয় একটি নাট্যাংশ। এতে অভিনয় করেছেন নাটোরেরই তিনজন শিল্পী আব্দুল আজিজ, সুভাশিষ ভৌমিক ও রনি। রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস ও তীক্ষ্ন নাট্যাংশ। মানসিক সমস্যা ও সমাধান, কোরবানির হাটে ব্যতিক্রমী বিক্রেতা, পণ্য পরিবহনে জটিলতা, গরু কেনার অভিনব উপায়, মিডিয়া ও বাস্তবতা, মুখের যন্ত্রণাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মতো এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম।
এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন-কে.এস.ফিরোজ, সোলায়মান খোকা, মহিউদ্দিন বাহার, আব্দুল কাদের, আফজাল শরীফ, শবনম পারভীন, নিপু, প্রাণ রায়, কাজী আসাদ, কামাল বায়েজিদ ও তারিক স্বপন প্রমুখ। পরিচালকের সহকারী হিসেবে ছিলেন যথারীতি রানা ও মামুন। 'ইত্যাদি'র আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে-এ প্রচার হবে ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।