পাশের দেশ ভারতের ছবির শুটিং নিয়মিতই বিদেশে হচ্ছে। ছবিগুলো দেখে বাংলাদেশি দর্শকের মনেও প্রশ্ন জাগে- আমাদের পরিচালক-শিল্পীরা কেন বিদেশের মনোমুঙ্কর পরিবেশে শুটিং করেন না! বিষয়টি মাথায় রেখে পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে রুবেল, ইমন, অমৃতা, সিদ্দিক, তানভীরসহ মোট নয়জনের একটি দল নতুন দুটি ছবির শুটিংয়ে ৬ জানুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা যান। ছবি দুটির নাম ছিল 'প্রথম দেখা' ও 'মিশন আফ্রিকা'। এগুলোর পরিচালক হিসেবে ছিলেন আহমেদ আলী মণ্ডল ও মারুফ আহমেদ। আর প্রযোজক হিসেবে ছিলেন মশিউর রহমান, মনিরুজ্জামান মনির এবং চয়ন নামের দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী। কিন্তু শেষমেশ শুটিং করতে পারেননি তারা। প্রথমে অমৃতা, এরপর রুবেল ও তানভীর এবং সবশেষ ১৩ জানুয়ারি ইমন দেশে ফিরে জানালেন ভয়ঙ্কর সব ঘটনার কথা।
ইমন বলেন, 'আমরা ঢাকা থেকে শুটিংয়ের উদ্দেশে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাচ্ছি- এর বাইরে কিছুই জানতাম না। কিন্তু দুবাই বিমানবন্দরে যাওয়ার পর দেখলাম ১৭-১৮ জন বাংলাদেশি আমাদের সঙ্গে বিমানে উঠল। তখনই আমরা আন্দাজ করলাম কোন অপরাধ হতে যাচ্ছে। তারপরও রুবেল ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে আফ্রিকা পর্যন্ত গেলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় নেমে যে হোটেলে থাকার কথা ছিল, দেখলাম সেখানে আমাদের সিট নেই। আর শুটিংয়ের জন্য কোনো জায়গার অনুমতিপত্রও নেই। পুলিশ আমাদের পরামর্শ দিলো অন্য কোনো হোটেলে গিয়ে থাকার। এরপর ওখানকার বাংলাদেশ হাইকমিশনের সেক্রেটারি খোকন ভাইয়ের সহযোগিতায় আমরা অন্য হোটেলে গিয়ে উঠি। এরপর প্রথমে অমৃতার ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে রুবেল ভাই ও তানভীর দেশে ফিরেন এবং সবশেষ ১৩ জানুয়ারি আমি দেশে ফিরে আসি।'
ইমন আরও বলেন, 'আমার যতটুকু ধারণা, ওখানকার একজনের সঙ্গে প্রযোজকের পূর্ব শক্রতা ছিল। তার নাম জালাল। আর আমাদের বিপদের জন্য দায়ী প্রযোজক মশিউর রহমান। তাদের ছাড় দেওয়া উচিত না। আমি এর আগে লালটিপ ছবির শুটিংয়ের কাজে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। এবার এমন একটি পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে, এটা সত্যিই ভয়ঙ্কর। বিমানবন্দরের পাশে ফোর্স বার্গ নামক একটি হোটেলে থাকার কথা ছিল আমাদের। সেটা না পেয়ে নিজ খরচে ট্যাম্বো বিমানবন্দরের সিটি লজ হোটেলে থাকতে হয়।'
আদম ব্যবসার হাত থেকে পরিত্রাণ চান শিল্পীরা এবং যারা এ চক্রের সঙ্গে জড়িত তাদের উপযুক্ত শাস্তি চান।
অমৃতা বললেন, 'দেশের বাইরে ছবির কাজে এবারই প্রথম। আমি প্রয়োজনে প্রযোজকের নামে মামলা করব। আমি একা একটি মেয়ে মানুষ, এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির শিকার হতে হবে, বুঝিনি। বিমানবন্দরে নামার পর তো কারও দেখা মেলেনি। প্রযোজকের দোষ এটা। আমাদের শিল্পীদের মধ্যে বাইরের লোক উঠিয়ে আদম ব্যবসা হচ্ছে বলেই চলচ্চিত্রাঙ্গন এগুচ্ছে না। এরকম হতে থাকলে কিভাবে চলচ্চিত্রের উন্নয়ন হবে।'