এফডিসিকে ঘিরে নানা অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের, এই প্রসঙ্গে আপনার মন্তব্য কী?
এফডিসির অনিয়ম আসলে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী শনিবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠানে যে বক্তব্য রেখেছেন তাতে বোঝা গেল তিনি এফডিসি বা চলচ্চিত্র জগতের সবকিছু সুন্দর এবং শৃঙ্খলার সঙ্গেই দেখছেন। কোনো অনিয়ম দেখেননি বা অনিয়মের কথাও শুনেননি। আসলে প্রকৃত চিত্র তার কাছ থেকে আড়াল করা হচ্ছে। এতে সবার ক্ষোভ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপরেই পড়ছে। যারা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের সত্যিকার অর্থে দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। কোনো সরকারকে অজনপ্রিয় করতে কর্মচারীরাই দায়ী। দায়িত্ব সচেতন না হলে এফডিসি বা চলচ্চিত্রের উন্নতি কখনো হবে না।
এফডিসিতে কাজের সুযোগ-সুবিধা এখন কেমন?
এফডিসিতে যে যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে তার যে ভাড়া তাতে কেউ চাইলেই কাজ করতে পারবে না। তাছাড়া ফ্লোর, স্পটসহ সবকিছুরই খরচ বেশি। ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু হওয়ার পর প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্যাকেজ ব্যবস্থায় স্বল্পভাড়ায় কাজের সুযোগ দিচ্ছে। এতে সবাই প্যাকেজ ব্যবস্থার দিকেই ঝুকছে।
সম্প্রতি এফডিসি নতুন আদেশ জারি করেছে।
তা হলো-ছবি সেন্সরে জমা দেওয়ার সময় এফডিসির অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত যে প্রত্যয়নপত্র নিতে হয় তার জন্য নাকি এখন থেকে ২৫ হাজার টাকা করে সার্ভিস চার্জ জমা দিতে হবে। এমনিতেই চলচ্চিত্র ব্যবসা মন্দ। তার ওপর এই আদেশ নির্মাতাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এফডিসির অনেক এমডি সম্পর্কে দুর্নীতি ও অযোগ্যতার অভিযোগ চলচ্চিত্রকারদের। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কী?
চলচ্চিত্রবান্ধব এমডির অভাবে এফডিসি ক্রমেই পঙ্গু হচ্ছে। সাবেক এমডি রাজীবের চালু করা লুটপাটের সংস্কৃতি এখনো চলছে। তাছাড়া এমডিদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে জবাবদিহিতা থাকে না। এই অবস্থার অবসানে চলচ্চিত্রপ্রেমী নির্দলীয় ব্যক্তিকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। যিনি চলচ্চিত্রকে দুর্দিনের হাত থেকে বাঁচাতে পারবেন।
এফডিসিতে অবস্থান নিয়ে চলচ্চিত্র সমিতিগুলো বিতর্কের মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?
অনেকেই হয়তো আমার ওপর নাখোশ হবেন। তারপরেও বলব এফডিসিতে পাঠাগার থাকবে, সমিতির অফিস নয়। এখন যেটি পরিচালক সমিতির অফিস সেটি ছিল আবদুল জব্বার পাঠাগার। এমডি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলাম পাঠাগারটি কোথায়? কোনো জবাব পাইনি। পাঠাগার থাকলে সেখানে বই ছাড়াও ছবির সিডি, প্রজেকশন রুম, সেমিনার হল থাকবে। নতুন প্রজন্মও আজিজ মার্কেটের মতো এখানে বসে চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্পর্কে নতুন ধারণা পেতে আলাপ আলোচনা করবে, জানবে। কারণ তারাই একসময় এই জগতে লিড দেবে। নান্দনিক কাজ দিয়ে চলচ্চিত্র জগৎকে সমৃদ্ধ করবে।
আলাউদ্দীন মাজিদ