ক্রাইম নিয়ে মানুষের কৌতুহল সীমাহীন। মানুষ জানতে চায় তাদের সম্পর্কে। তাদের অপরাধ সম্পর্কে। মানুষের এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে পরিচালকরাও তাদের সিনেমাতে তুলে আনেন বিখ্যাত সব অপরাধীদের উত্থান-পতন। বলিউডে অপরাধীদের কাহিনী নির্ভর ব্যানডিট কুইন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ের শুট আউট অ্যাট ওয়াডালা- বক্স অফিস কাঁপিয়েছে। ঘরে তুলেছে ভালো মুনাফা। তবে এসব সিনেমাগুলো ভালো লাগলেও কোন সিনেমায় কোন অপরাধীকে তুলে আনা হয়েছে তা অনেকেরই জানা থাকে না। আসুন জেনে নিই এমন কিছু অপরাধী ও সিনেমাকে।
দাউদ ইব্রাহিম
ভারতের আন্ডারওয়ার্ডের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় দাউদের নাম। ক্রাইমের জন্য বিশ্বের দরবারে তার স্থান তৃতীয়। মুম্বাইয়ে জন্মেছিলেন দাউদ। তারপর ক্রমশ উপস্থিত বুদ্ধির জোরে জায়গা করে নেন ভারতের অপরাধ জগতে। হেন কোনো বেআইনি ব্যবসা বোধহয় নেই যাতে দাউদের নাম নেই। ড্রাগ থেকে শুরু করে বেআইনি অস্ত্র সরবরাহ, সবেই রয়েছেন দাউদ। আর এমন একজন পার্সোনালিটিকে অবহেলা করবে বলিউড? ব্ল্যাক ফ্রাইডে, ওয়ানস আপন আ টাউম ইন মুম্বাই দোবারা, কোম্পানি, দেব ডি সহ আরো বেশ কিছু সিনেমায় দাউদের চরিত্রকে সেলুলয়েডে আনা হয়েছে। কোথাও স্বনামে, কোথাও বেনামে।
ফুলন দেবী
চম্বলের দস্যু ফুলন দেবীর কথা শোনেনি এমন কাউকে ভারতে খুঁজে পাওয়া শক্ত। সেই ফুলন দেবীকে নিয়ে সিনেমা বানিয়েছিলেন শেখর কাপুর। নাম ব্যানডিট কুইন। সিনেমাটিতে ফুলন দেবীর বিয়ে, সন্তান, শারীরিক নির্যাতন আর সাধারণ মেয়ে থেকে দস্যু হয়ে ওঠার সব গল্পই বর্ণনা করা হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে তৈরি হয়েছিল সিনেমাটি। এতে ফুলন দেবীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলসেন সীমা বিশ্বাস। সিনেমাটি ১৯৯৬ সালে জাতীয় পুরস্কার পায়। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান সীমা বিশ্বাস।
হাজি মাস্তান
একসময় মুম্বাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ডে তার প্রতিপত্তি ছিল। শুধু আন্ডারওয়ার্ল্ড কেন, বলিউডেও অবলীলায় যাতায়াত করতেন হাজি মাস্তান। জরুরি অবস্থার সময় তার জেল হয়। ১৯৯৪ সালে খুন হন দাজি মাস্তান। তার কাহিনি সিনে পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে ওয়ানস আপন আ টাইম ইন মুম্বাই সিনেমাটিতে। সিনেমাটিতে সুলতান মির্জ়ার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন অজয় দেবগন। সেই সুলতান মির্জ়াই আসলে হাজি মাস্তান।
মনিয়া সুরবে
আম আদমির কাছে দাউদ বা ফুলন দেবীর মতো পরিচিতি তার ছিল না। জন আব্রাহাম অভিনীত শুট আউট অ্যাট ওয়াডালা সিনেমার পরই আলোচনায় আসেন এই গ্যাংস্টার। ১৯৮২ সালে মারা যান মনিয়া সুরবে। সাধারণের মধ্যে পরিচিতি না থাকলেও ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইতিহাস ঘাটলে তার নাম পাওয়া যায়। মনিয়াই প্রথম গ্যাংস্টার যিনি প্রথম এনকাউন্টারে মারা যান। এই মনিয়া সুরবের জীবন নিয়ে শুট আউট অ্যাট ওয়াডালা সিনেমা বানান সঞ্জয় গুপ্তা।
ছোটা রাজন
বলিউডের চলচ্চিত্র জগতে ছোটা রাজনকে নিয়ে কোনো সিনেমা বানানো হয়নি ঠিকই। কিন্তু কম্পানি সিনেমার চন্দু চরিত্রটি ছোটা রাজনকে মাথায় রেখেই দেখানো হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের বাস্তব সিনেমায় অবশ্য চোটা রাজনকে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল।
বীরাপ্পান
চন্দনদস্যু বীরাপ্পান। একসময় তার নামে এলাকা কাঁপত। বীরাপ্পানের পিছনে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স লাগানো হয়। ২০০৪ সালে পুলিশের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা যান বীরাপ্পান। বলিউড বীরাপ্পানের কাহিনিকে পর্দায় না আনলেও তাকে নিয়ে তামিল সিনেমা হয়েছিল। নাম বানা যুদ্ধম। বীরাপ্পানের চরিত্রে অভিনয় করেন কিশোর।
বিডি-প্রতিদিন/১৪ জুলাই ২০১৫/ এস আহমেদ