টম ক্রুজ। নামটি শুনলেই শুধু মিশন-মিশন স্বাদ ভেসে বেড়ায় বাতাসে। তার ছবি মানেই গোলাগুলি-মারামারি আর রোমহর্ষক সব কাণ্ড। এসব হয়তো পুরুষ দর্শকেরই ভালো লাগে। নারীরা তো এসব থেকে দূরে থাকার কথা। কিন্তু একটি তথ্য শুনলে অবাক না হয়ে থাকা যাবে না। টম ক্রুজকে বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ নারী তারকারা জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চান। হ্যাঁ, নারী দর্শকের কাছেও টম ক্রুজ বেশ জনপ্রিয়। আর তাই তার মিশন ইম্পসিবল সিরিজ বিশ্বজুড়ে আলোচিত এবং ভীষণ জনপ্রিয়। তাই ক্রুজ একের পর এক মিশন নিয়েই আছেন। এবার তিনি শুরু করছেন নতুন মিশন। 'শুরু করছেন' বলাটা ভুল হচ্ছে। কারণ এরই মাঝে মিশন শুরু হয়ে গেছে। কারণ ৩১ জুলাই মুক্তি পেয়েছে তার নতুন ছবি 'মিশন ইম্পসিবল ফাইভ-রগ নেশন'। আর তাই বলা যায়, এজেন্ট ইথান হান্ট রূপে আবার ফিরে এসেছেন ক্রুজ। তবে এবার নতুনত্ব থাকছে অনেক। এবারের চরিত্র শুধু বুদ্ধিমত্তায়ই তুখোড় নয়, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোটরসাইকেল নিয়ে নানা কাণ্ড, সাহসী সঙ্গী ও স্ট্যান্টবাজির চোখধাঁধানো সব কীর্তি।
'মিশন ইম্পসিবল ফাইভ-রগ নেশন' ছবিটির চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন দ্য ইউজুয়াল সাসপেক্টস, অ্যাডজ অব টুমোরো খ্যাত নির্মাতা ক্রিস্টোফার ম্যাককোয়ারি। ১৯৯৬ সালে তারই দ্য ইউজুয়াল সাসপেক্টস ছবিটি সেরা চিত্রনাট্যে বিভাগে অস্কার অর্জনের কৃতিত্ব লাভ করে। ২০১৫ সালে তার একমাত্র ছবি মিশন ইম্পসিবল সিরিজের পঞ্চম ছবি 'রগ নেশন'। ছবির গল্প ইথান হান্টকে কেন্দ্র করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কাল্পনিক গুপ্তচর সংস্থা 'আইএমএফ'র পুরোধা হান্ট। রাষ্ট্রের স্বার্থে হান্ট ও তার সঙ্গীরা কখনো পিছপা হন না। কিন্তু 'রগ নেশান' নামে একটি চক্রের কাজ হচ্ছে তাদের উন্নয়ন কার্যকলাপে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। ইম্পসিবল মিশন ফোর্সের চেয়েও দক্ষ এই চক্রের মূল উদ্দেশ্য হান্টদের ধ্বংস ডেকে আনা। এই চক্রকেই এবার সমূলে বিনাশ করার জন্য দুঃসাধ্য অভিযানে নেমে পড়েছেন এজেন্ট হান্ট ও তার সহযোগীরা। তাদের প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার দুর্দান্ত কিছু স্ট্যান্ট নিয়ে ছবির গল্প।
অ্যাকশনধর্মী ছবিতে স্ট্যান্টম্যান ব্যবহার না করে নিজেই দুঃসাহসী স্ট্যান্ট দেখাতে ওস্তাদ টম ক্রুজ। বিল্ডিং থেকে কোনো স্ট্যান্ট ছাড়া লাফ দেওয়া ছিল এ যাবৎকালে তার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। তবে সিরিজের নতুন ছবিটিতে টমের অ্যাকশনগুলো অতীতের যে কোনো কিছুর মাত্রা ছাপিয়ে যাবে বলে জানান পরিচালক। এ ছবিতে টমকে দেখা যাবে উড়ন্ত প্লেনের দরজা ধরে ঝুলে থাকতে। তাও কি-না কোট-প্যান্ট, জুতো পরে। মিশন ইম্পসিবল রগ নেশন ছবিতে ৫০০০ ফুট উঁচু উড়ন্ত মিলিটারি এয়ারবাসের দরজার একপ্রান্ত ধরে খোলা আকাশে ঝুলতে থাকা টমকে দেখলে যে কেউ চমকে যেতে পারেন। তবে এসব নিয়ে এখনো বিন্দুমাত্র ভয় নেই ৫২ বছর বয়স্ক এ অভিনেতার।
ক্রুজ বলেন, 'ছবিটির কিছু দৃশ্য স্ট্যান্ট করা ছিল মারাত্দক অভিজ্ঞতা। পাঁচ হাজার ফুট উপরে একটি এয়ারবাসের দেহে ঝুলে রয়েছি আমি। দৃশ্যটি আমাকে আটবার স্ট্যান্ট করতে হয়েছে। একবার তো প্রায় রিব ভেঙেই যাবে মনে হচ্ছিল।'
২২ মার্চ ছবিটির প্রথম ট্রেলার মুক্তি পায়। এরপর থেকে দর্শকদের আশার পারদ আরও চওড়া হয়েছে। ১৯৯৬ সালে মিশন ইম্পসিবল সিরিজের প্রথম ছবিতেই ইয়ান হান্ট চরিত্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন হলিউডের হার্টথ্রুব এ অভিনেতা। এবার জে জে আব্রাম ও ডেভিস এলিসনের সঙ্গে যৌথভাবে নিজের নামটিকেও যোগ করলেন প্রযোজকের কাতারে। তাই এবার টম ক্রুজের কারিশমা দেখার জন্য একটু বেশি আগ্রহ দর্শকদের।
১৯১ মিনিটব্যাপী ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন জেরমি রেনার, সাইমন পেগ, রেবেকা ফার্গুসন, সিন হ্যারিস প্রমুখ। বিশ্বজুড়ে ছবিটির প্রচার স্বত্বা নিয়ে এখন ব্যস্ত প্যারামাউন্ট পিকচার্স লিমিটেড। আর ছবিটি নিয়ে আশায় বুক বেঁধে আছেন ক্রুজ নিজে। তিনি বলেন, 'মিশন ইম্পসিবল লাভারদের বলতে চাই, আগের যে কোনো ছবি থেকে এবারের পর্ব উন্নত এবং চমকপ্রদ। এবারের পর্বটি নিয়ে আমি ভীষণ আশাবাদী। একই সঙ্গে আমি মনে করি, দর্শক আগের থেকেও বেশি পছন্দ করবেন আমাদের সিরিজটি। কারণ আমরা নতুন কিছু এখনো দিতে পারছি।'