কখন শেষ হবে প্রতীক্ষার পালা? বেলা যে বয়ে যায়, কখন মঞ্চে আসবেন বলিউড সুন্দরী?- এ প্রশ্ন তখন হলভর্তি মানুষের মাথায়। প্রিয় তারকাকে দেখতে যানজট পেরিয়ে অনেক দূর থেকে ছুটে এসেছেন অনেকে। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। শরীরে আকাশী আর সোনালী আবরণ জড়িয়ে মঞ্চে এসে দর্শকদের শুভেচ্ছা জানালেন সেই চিরাচরিত মিষ্টি হাসিতে। সঙ্গে সঙ্গে পুরো হলে জ্বলে উঠলো অসংখ্য তারা! জ্বলে উঠলো বাসা থেকে পূর্ণ চার্জ করে আনা মোবাইলের স্ক্রিন। শুরু হল নিজ হাতে নায়িকাকে ক্যামেরাবন্দি করার প্রতিযোগিতা। চলতে থাকলো বলিউডের এই অভিনেত্রীর ক্যাটওয়াকের দৃশ্যধারণের পালা। রাজধানীর হোটেল র্যাডিসন ব্লুর বলরুমে গতকাল শুক্রবার (২১ আগস্ট) রাতে 'দি লাস্ট্রাস রানওয়ে' শীর্ষক ফ্যাশন শোর শেষ প্রান্তে দেখা গেলো এই দৃশ্য।
দিয়াকে দর্শকরা চিনতে শুরু করেছে ২০০১ সালে, ‘রেহনা হ্যায় তেরে দিল মে’ (মাধবন, সাইফ আলি খান) ছবির মাধ্যমে। ‘জারা জারা’ গানের মতোই তার স্নিগ্ধ মুখখানি পাওয়া গেলো ঢাকায়ও। তাই তাকে সামনে পেয়ে আনন্দের ফোয়ারা ছড়ালো সৌন্দর্যপূজারীদের মাঝে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের এই রূপবতী ঢাকায় এসেছেন শুক্রবারেই।
ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া এশিয়া প্যাসিফিক ২০০০ ও মিস এশিয়া প্যাসিফিক ২০০০ বিজয়ী দিয়া বাংলা ছবিতেও (পাঁচ অধ্যায়) অভিনয় করেছেন। বাংলাদেশে এবারই প্রথম এলেন জানিয়ে ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা রানওয়েতে হাঁটার পর বলেছেন, 'বাংলাদেশে এটাই আমার প্রথম আসা। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ। সময়-সুযোগ পেলে আবার এ দেশে আসতে চাই।'
দিয়ার মুখাবয়বে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের অদ্ভুত মেলবন্ধন। বলিউডে ‘দিওয়ানাপান’ (অর্জুন রামপাল), ‘তুমকো না ভুল পায়েঙ্গে’ (সালমান খান), ‘তুমসা নাহি দেখা’ (এমরান হাশমি), ‘পরিণীতা’ (সাইফ আলি খান, সঞ্জয় দত্ত), ‘হানিমুন ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড’, ‘লাভ ব্রেকআপস জিন্দেগি’ (জায়েদ খান) ছবিগুলোর জন্যও দর্শকপ্রিয় তিনি। শুধু অভিনয়ই নয়, প্রযোজক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন দিয়া। গত বছর বিদ্যা বালানকে নিয়ে বানিয়েছেন 'ববি জাসুস'। সেই দিয়াকে সামনা-সামনি পেয়ে আপ্লুত হলো ঢাকাবাসী।
এটি ছিলো 'দি লাস্ট্রাস রানওয়ে'র ষষ্ঠ আয়োজন। এতে এশিয়ার তিন দেশ বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ফ্যাশন ডিজাইনাররা স্ব স্ব সৃজনশীলতাকে উপস্থাপন করেছেন নতুন আঙ্গিকে। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে পন্ডস ও ইনফিনিটি। এখানে দিয়ার পাশাপাশি র্যাম্প মডেলরা বাংলাদেশের নোভা জেনুইন স্বরভস্কি, রুবিজ, নিশা আলি ও সাশা এক্সক্লুসিভস, ভারতের জ্যোতিসাচদেব আইয়ার, কোমল সুদ ও জ্যোৎস্না তিওয়ারি এবং পাকিস্তানের শামশা হাশওয়ানির ডিজাইন করা পোশাক পরে ক্যাটওয়াক করেন।
ফ্যাশন শোর মূল শো স্টপার ছিলেন দিয়াই। সবশেষ চমক হিসেবে তিনি মঞ্চে আসতেই রাতের সব আলো যেন ধরা দিলো তার রূপে! ফ্যাশন শোতে ক্ষণিকের উপস্থিতিতেই সবার মন কেড়েছেন গাঢ় বাদামি চোখের এই সুন্দরী। তার সোনালি রঙা চুলগুলো ছিলো ঢেউয়ের মতো সাজানো। আলো-ঝলমল মঞ্চে রুবিজের ডিজাইন করা পোশাকে সেজে ক্যাটওয়াক করে দ্যুতি ছড়ান দিয়া। পোশাকে সেজে আসেন সোহা।
‘দি লাস্ট্রাস রানওয়ে’ উপভোগ শেষে বলরুমের বাইরে এসে ভিড় জমান দর্শকদের অনেকে। কারণ এই আয়োজনের অংশ হিসেবে ফেসবুকে পরিচালিত এক প্রতিযোগিতামূলক প্রচারণার বিজয়ীরা ছবি তোলার সুযোগ পাবেন দিয়ার সঙ্গে। ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার এই অভিনেত্রীকে এ যাত্রায়ও একঝলক দেখার আশায় দাঁড়িয়ে রইলেন অনেকে। এবার আর মোবাইলে ভিডিও নয়, দিয়াকে সেলফিতে ধরে রাখার চেষ্টা।
বিডি-প্রতিদিন/২২ অাগস্ট, ২০১৫/ এস আহমেদ