একেবারে ফিল্মি কায়দায় অটোর পিছনে ধাওয়া করে হেনস্থাকারীকে ধরিয়ে দিলেন মুম্বাইয়ের এক উঠতি অভিনেত্রী। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাতে বান্দ্রায় পূর্ণিমা বহেল নামের ওই অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে অশালীন মন্তব্য করে দুই দুষ্কৃতী। এমনকি, তাকে যৌনকর্মী ভেবে জানতে চায় তার দরদামও। ক্ষেপে ওঠেন অভিনেত্রী। শুরু করেন চিৎকার। ঝামেলা আঁচ করতে পেরে স্থান ত্যাগ করতে গিয়েও পারলেন না। এক অভিযুক্ত পালিয়ে গেলেও অন্যজন এখন গরাদের ওপারে।
বৃহস্পতিবার রাতে রোজকার মতো জগিং করতে বেরিয়েছিলেন পূর্ণিমা। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ জগিং শেষ করে একটি বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি। ফোনে কথা বলার ফাঁকে সেখানে হাজির হয় অজ্ঞাত পরিচয় দুই ব্যক্তি। বিভিন্নভাবে তাকে বিরক্ত করা শুরু করে তারা। পূর্ণিমার অভিযোগ, ''প্রথমে একজন এসে হঠাৎ-ই আমার নাম জিজ্ঞাসা করে। আমার কোনো সাহায্য দরকার কি না তাও জানতে চায়। প্রথমে আমি পাত্তা দিইনি। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আরও একজন এসে আমার পাশে বসে পড়ে। ওরা বার বার আমাকে বিরক্ত করতে থাকে। বিভিন্নভাবে আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। আমি ভয় পেয়ে যাই।''
২৬ বছরের ওই অভিনেত্রীর অভিযোগ, এরপর ওই দু'জন তাকে অশালীন প্রস্তাব দেয়। জানতে চায়, রাতটা তাদের সঙ্গে কাটাতে কত টাকা নেবেন তিনি। রেগে গিয়ে পূর্ণিমা তাদের পুলিশের ভয় দেখান। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। ভয় পেয়ে পূর্ণিমা সাহায্যের জন্য চিৎকার শুরু করেন। রাস্তায় তখন আরও অনেকেই জগিং করছিলেন। কিন্তু কেউই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। তবে পথচারীদের চরম অসহযোগিতাও দমাতে পারেনি পূর্ণিমাকে। টানা ১০ মিনিট চিৎকারের পর গতিক সুবিধার নয় বুঝে একটা অটোয় চেপে পালানোর চেষ্টা করেন ওই দুই উত্যক্তকারী। হার মানেননি পূর্ণিমা। ততক্ষণে ঠিক করে ফেলেছেন দু'জনকে উপযুক্ত শাস্তি দিয়েই ছাড়বেন। যেমন ভাবা, তেমন কাজ। আরেকটা অটোয় চেপে ওই দু'জনকে ধাওয়া করেন তিনি। হাই অকটেন অটো চেজের পর হিল রোডে সেন্ট অ্যান্ড্রুজের কাছে টহলদারি পুলিশ অবশেষে আটকায় অভিযুক্তদের অটো।
পূর্ণিমা বলেন, ''ওদের অটো পুলিশি নজরদারি টপকে পালিয়েই যাচ্ছিল। সে সময় আমি অটো থেকে লাফিয়ে নেমে দৌড়ে গিয়ে পুলিশকে ওদের আটকাতে বলি। তার পরেই ওরা ধরা পড়ে।''
ধরা পড়েই ভোল বদলে যায় অভিযুক্তদের। হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে থাকে। অনুরোধ করতে থাকে, আর একটা সুযোগের জন্য। তাদের কথায় অবশ্য পূর্ণিমা কান দেননি। দায়ের করেন এফআইআর। বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে পুলিশের হাত গলে পালিয়েছে এক অভিযুক্ত। তারাই জানিয়েছে হরিয়ানার বাসিন্দা ধৃত অভিযুক্ত দীনেশ যাদব পেশায় বক্সার। তাকে জেরা করে জানা গেছে অন্য অভিযুক্তও বক্সার এবং হরিয়ানার বাসিন্দা।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ অক্টোবর ২০১৫/ এস আহমেদ